General Election 2019: রাজ্যের বাকি ৪০টি লোকসভা আসনে ভোটের আগে জোড়া কৌশল নিয়েছে বিজেপি। শুক্রবার ৬, মুরলীধর সেন লেনে প্রথমে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও পরে দলের কর্ম সমিতির সদস্য মুকুল রায় সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাছাড়া এদিন মুকুল রায়ের নেতৃত্বে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি একদিকে বলছে, নির্বাচন কমিশন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করাতে ব্যর্থ। অন্যদিকে, তাঁরাই আবার দাবি করছেন, তিনশোর ওপর বুথে বেনিয়ম হলেও দুটি আসনেই জয় পাবে পদ্মফুল। আর এরপরও সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছে রাজ্য বিজেপি।
এদিন কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ? রাজ্য বিজেপির সভাপতির বক্তব্য, "কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভোট ভাল হয়েছে। কিন্তু কিছু বুথে গন্ডগোল হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন অবাধ ভোট করাতে ব্যর্থ।" একইসঙ্গে তাঁর দাবি, "প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।" এই সাংবাদিক বৈঠকের ঘণ্টাদুয়েক পর বিজেপি দফতরে আসেন মুকুল রায়। তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেসব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের সরিয়ে দিতে হবে।" কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে সরানোর আগেই বাহিনী মোতায়েন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করে মুকুল বলেন, "তাঁকে সরিয়ে নির্বাচনে কোনও লাভ হয়নি।" তবু এত কিছুর পরও তাঁর দাবি, "দুটি কেন্দ্রের ফলই বিজেপির পক্ষে যাবে। ফল হবে ২-০।" এদিন কলকাতায় ও দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে দাবি সনদ পেশ করেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোটের পর কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নির্বাচন পরিচালনা কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান ধর্নায় বসেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, যেসব বুথে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন ছিল, সেসব কেন্দ্রে পুনরায় ভোট করাতে হবে। পরের দিন কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন স্বয়ং মুকুল রায়। কোচবিহারে ২৯৭ ও আলিপুরদুয়ারে ৪২ বুথে পুনর্নির্বাচনের লিখিত দাবি জানায় বিজেপি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পদ্ম শিবির আসলে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে নির্বাচন কমিশনের ওপর। রাজ্যে সবেমাত্র ২টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে। এখনও বাকি রয়েছে ৪০টি লোকসভা কেন্দ্রে। তাই চাপের রাজনীতি অব্যাহত রেখে কাজ হাসিল করতে চাইছে বিজেপি। বিজেপি চাইছে, প্রতি বুথে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন হোক। মুকুল এদিন হিসাব কষে দেখান, যে সংখ্যক আধাসেনা থাকছে তাতে পরের দফায় তিন কেন্দ্রে প্রতি বুথে কম করে দু'জন করে জওয়ান মোতায়েন করা যাবে।
তবে শুধু নির্বাচন কমিশনকে চাপে রাখা নয় বাকি কেন্দ্রের নির্বাচনের আগে দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতেও দাওয়াই দিয়েছেন মুকুল। তাঁর দাবি, দুই কেন্দ্র ফল ভাল করবে বিজেপি। ফল হবে ২-০। মুকুলের মতো অভিজ্ঞ ভোট ম্যানেজারের এমন দাবি নি:সন্দেহে জোর বাড়াবে নিচু তলার কর্মীদের। অর্থাৎ বিজেপি এখন জোড়া কৌশলে এগোচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি বাংলায় পদ্ম ফুটবে, উত্তর মিলবে ২৩ মে।