Advertisment

এমন সরকার আসুক, যারা শম্ভুলালকে ফাঁসি দেবে! ভোট দিয়ে বললেন আফরাজুলের পরিবার

"এই ভোটটা আমার বাবার জন্য দেওয়া জরুরি। কে জিতবে, কে হারবে আমরা জানি না। কিন্তু আমার বাবার হত্যাকারীকে যারা সমর্থন করেছিল, তারা যেন কোনোভাবেই না জেতে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
shambhunath regar afrazul haque

আফরাজুলের মেয়ে হাবিবা

"যে জেতে জিতুক, কিন্তু আমার বাবার হত্যাকারীকে যারা সমর্থন করেছিল, তারা যেন হেরে যায়।" মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ফিরে এই কথাই বলছেন রাজস্থানে খুন হওয়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক মহম্মদ আফরাজুলের মেয়ে রেজিনা খাতুন। তাঁর পাশে বসে তখন চোখের জল মুছছেন আফরাজুলের স্ত্রী গুলবাহার বিবি, বড় মেয়ে জোশানারা বিবি, ছোট মেয়ে হাবিবা খাতুন। দশম শ্রেণির ছাত্রী হাবিবার অবশ্য ভোটাধিকার নেই।

Advertisment

মঙ্গলবার তৃতীয় দফার ভোটে মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে কালিয়াচক থানার অন্তর্গত সৈয়দপুর গ্রামে বুথের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন আফরাজুলের স্ত্রী-মেয়েরা। ভোট মেটার পরেই বিড়ি বাঁধতে বেরিয়ে যান গুলবাহার। পরে বাড়িতে পাওয়া গেল ছোট মেয়ে হাবিবা আর মেজ মেয়ে রেজিনাকে। রেজিনার কথায়, "আমরা গরীব মানুষ। কোনওদিনই রাজনীতি করিনি। এমনও হয়েছে, ভোটের দিন বুথে যাওয়া হয়নি। কিন্তু এবার খুব সচেতন ভাবেই সকাল সকাল গিয়ে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছি। কারণ, এই ভোটটা আমার বাবার জন্য দেওয়া জরুরি। কে জিতবে, কে হারবে আমরা জানি না। কিন্তু আমার বাবার হত্যাকারীকে যারা সমর্থন করেছিল, তারা যেন কোনোভাবেই না জেতে।"

২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তারিখেই রাজস্থানে খুন করা হয় আফরাজুলকে। রাজসমন্দের বাসিন্দা শম্ভুলাল রেগর আফরাজুলকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করে, তারপর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। একটু একটু করে আফরাজুলের পুড়ে মরার দৃশ্যটির ভিডিও করা হয়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। পুলিশ শম্ভুলালকে গ্রেফতার করলেও সে জানায়, তার কোনও অনুতাপ নেই। নিজের কাজের জন্য সে গর্বিত, এবং স্থানীয় কোনও মেয়েকে 'লাভ জেহাদের' কবল থেকে বাঁচানোর জন্যই এমন কাজ করেছে সে।

বিভিন্ন মহলে ধিক্কার উঠলেও কট্টর হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠন শম্ভুলালকে কার্যত নায়কের মর্যাদা দিয়েছিল। তার হয়ে মামলা লড়ার জন্য তহবিলও সংগ্রহ করা হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে উত্তর প্রদেশ নবনির্মাণ সেনা নামক এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির নাম আগ্রা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে প্রচার করা হয়, যদিও শেষ পর্যন্ত শম্ভুলাল প্রার্থী হয় নি।

এদিন আফরাজুলের ছোট মেয়ে হাবিবা বলেন, "আমাদের সংসারটা ভেসে গিয়েছে। মা বিড়ি বেঁধে যে ক'টা টাকা পায়, তা দিয়েই কোনওমতে সংসার চলে। মেজদিদি একটা ৬,০০০ টাকার পার্ট টাইম চাকরি পেয়েছে। কিন্তু ওর-ও তো সংসার আছে।" দশম শ্রেণির পড়ুয়া হাবিবার কথায়, "আর কিচ্ছু চাই না, শুধু ওই লোকটার ফাঁসি চাই। ও ফাঁসিতে মরুক, আমরা দেখব। এই ভোটে এমন সরকার আসুক, যারা ওকে ফাঁসি দেবে।"

Love Jihad
Advertisment