ফের একবার অসমাপ্ত নির্বাচনী সংস্কার সম্পূর্ণ করার আবেদন জানিয়ে, এবং সরকারি আওতার বাইরে বেরিয়ে পূর্ণ স্বাধীনতা চেয়ে আইন সচিবের সঙ্গে গত মাসে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আইন সচিব সুরেশ চন্দ্রকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা পুনরায় জানান, নির্বাচন কমিশনের পূর্বতন দাবী অনুযায়ী কমিশনের তিনজন সদস্যের জন্যই সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বর্তমানে শুধুমাত্র মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ক্ষেত্রেই ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসন প্রক্রিয়ার সংস্থান রয়েছে। তাঁর দুই সহকর্মীকে তাঁরই পরামর্শে সরিয়ে দিতে পারে সরকার।
এছাড়া আর্থিক দিক থেকেও পূর্ণ স্বাধীনতা চায় কমিশন। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ) এবং ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি)-এর ক্ষেত্রে যেমন হয়, নির্বাচন কমিশনও চায় যে কমিশনের বাজেট সংসদের ভোট এবং অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে 'কনসলিডেটেড ফান্ড অফ ইন্ডিয়া' থেকে আসুক।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে ধান কেনার দৌড়ে শীর্ষ তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ
সোজা কথায়, কমিশনের স্বায়ত্বশাসনে ফাঁক থেকে গেছে, কারণ তারা এখনও আর্থিকভাবে সরকারের ওপর নির্ভরশীল, সরাসরিভাবে না হলেও। এছাড়া, তিন কমিশনারের দুজনের ভাগ্যও নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। অসমাপ্ত নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে আইন সচিবের সঙ্গে গত মাসের বৈঠক এক বছরের বেশি ব্যবধানে এই প্রথম। অরোরার দুই পূর্বসূরী ও পি রাওয়াত এবং এ কে জটির সময়কালে কোনো বৈঠক হয় নি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দুই কমিশনারের সুরক্ষা এবং আর্থিক স্বাধীনতা ছাড়াও অরোরা অর্থের বিনিময়ে প্রকাশিত খবরকে নির্বাচনী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার ওপরে জোর দেন। এর পাশাপাশি নির্বাচনী এফিডেভিটে মিথ্যে তথ্য দিলে শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ছ'মাস থেকে দু'বছর করা, বিধান পরিষদের নির্বাচনে অর্থব্যয়ের সীমা বেঁধে দেওয়া, এবং উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে তারকা প্রচারকদের সংখ্যা রাষ্ট্রীয় স্তরে ৪০ এবং রাজ্য স্তরে ২০ থেকে কমানোর প্রস্তাব দেন অরোরা। বর্তমানে বিধান পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা কত অর্থ ব্যয় করতে পারেন, তার কোনও সীমা নির্ধারণ করা নেই। উল্লেখ্য, ভারতে বিধান পরিষদ বা লেজিস্লেটিভ কাউন্সিল রয়েছে মোট সাতটি রাজ্যে - জম্মু কাশ্মীর, অন্ধ্র প্রদেশ, বিহার, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং তেলঙ্গানা।