loksabha election 2024 Amit Shah interview: বাংলা সহ সারা দেশে ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে লোকসভার ষষ্ঠ দফার ভোটপর্ব। শেষ দফার ভোটপর্ব বাদ দিলে প্রথম পাঁচ দফাতেই ৩০০-৩১০টি আসন পেতে চলেছে বিজেপি। এমনটাই দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, 'পঞ্চম দফাতেই আমরা ম্যাজিক ফিগার পার করেছি। আমরা যদি শেষ দফার ভোট বাদ দিই তাহলেও ৩০০-৩১০টি আসন এখন পর্যন্ত বিজেপি পেতে চলছে'।
ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে ষষ্ঠ দফার ভোট। বাকী রয়েছে কেবল এক দফার ভোট। এর মাঝেই ম্যাজিক ফিগার পার করেছে বিজেপি বলেই মনে করছেন মোদী সরকারের সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'মাত্র ৫ দফাতেই বিজেপি ম্যাজিক ফিগার ২৭২ আসন পার করেছে'।
২০২৪-এর প্রচারের সঙ্গে ২০১৯ অমিত শাহের প্রচারের ফারাক সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, 'আমি সারা ভারত ভ্রমণ করেছি। লাদাখ বাদে, আমি প্রতিটি রাজ্যে, প্রতিটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রচার করেছি। ২০১৯ সালে, জনগণের মধ্যে একটি অনুভূতি ছিল যে দেশ মোদীর কাছ থেকে উপকৃত হয়েছে এবং মোদী যেটা করছেন সেটা ভালোর জন্যই করছেন। ২০২৪ সালে, মানুষ ভারতকে একটি মহান দেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য মানুষ মোদীর উপর আস্থা রেখেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি জনগণের বিশ্বাস দেশ এখন যে যে রাস্তায় চলছে সেটিই সঠিক'।
বেকারত্ব প্রসঙ্গে বারে বারে বিরোধী দলগুলি বারে বারে নিশানা করেছে মোদী সরকারকে। মোদী সরকার তার দু কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি এমন দাবি বারে বারে উঠে এসেছে রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গলাতেও। সেই প্রশ্নে অমিত শাহ বলেন, 'দুর্ভাগ্যবশত, লোকেরা চাকরি মানে সেটা সরকারি চাকরি ধরে নিচ্ছেন, এই ১৩০ কোটি জনসংখ্যা, কোনো সরকারের পক্ষে সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। গত ১০ বছরে ১.১৭ লাখ স্টার্ট-আপ চালু হয়েছে, প্রতি স্টার্ট-আপে গড়ে পাঁচজন করে যদি কাজ করেন তাহলে কী কর্ম সংস্থানের সুযোগ হয়না? ৪৭ কোটি মানুষ মুদ্রা লোন পেয়েছেন। ২০১৬-২০১৭ সালে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১শতাংশ, ২০২৩সালে তা কমে হয়েছে ৩.৩ শতাংশে।
আরও পড়ুন- < Cyclone Remal Live Update: চালু হল মেট্রো পরিষেবা, বিকেলে দুর্যোগ কাটার ইঙ্গিত >
৫৪২ টির মধ্যে, বিজেপি যদি একাই ৩০০ এর বেশি আসন পায়, এর মানে কি এই যে জনগণ বিরোধী দল চায় না? এই প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'বিরোধীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জনগণই নির্ধারণ করতে পারেন'।
একটি শক্তিশালী বিরোধী দল দেশের জন্য মঙ্গলজনক বলে আপনি কি স্বীকার করেন? উত্তরে অমিত শাহ বলেন, 'হ্যাঁ, আমি সেটা স্বীকার করছি। কিন্তু সব কিছুই জনগণ ঠিক করবে'। পাশাপাশি তিনি বলেন, 'দেশে বিরোধীরা সেভাবে শক্তিশালী নয় তার জন্য মোদীর কোন মিশন থেমে নেই। ১০ বছরে ৬০ কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ানো হয়েছে। করোনার সময় উন্নত দেশগুলিতেও, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই থমকে গিয়েছিল। মোদী শক্ত হাতে করোনা সংকট থেকে দেশকে বের করে এনেছেন'।
৩৭০ ধারা বাতিলের পর বিজেপির কি এবার কাশ্মীরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত ছিল? উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'বিজেপির জন্য কাশ্মীরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুব একটা তাৎপর্যপূর্ণ নয়'। তিনি বলেন, ৭০বছর ধরে, কংগ্রেসের ভুল নীতির কারণে, ভারতের সন্ত্রাস ও হিংসার সাক্ষ্মী থেকেছে'।
অমিত শাহ আরও বলেছেন, 'আমরা কেন্দ্রের ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি। সংখ্যা গরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও আমরা দেশের সংবিধানে কোন বদল আনি নি। আমরা আমাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করেছি 370, 35 A ধারা অপসারণ করতে, সন্ত্রাসবাদ দূর করতে, নকশালবাদের অবসান ঘটাতে, রাম মন্দির তৈরি করতে এবং ৬০ কোটি মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে। ইন্দিরাজীর সময়ে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল, তিনি সেটা ব্যবহার করেছিলেন জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার কাজে'।
সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, 'আমি তুষ্টিতে বিশ্বাস করি না। আমাদের কোনও পরিকল্পনাই ধর্মের ভিত্তিতে নয়, আমরা কারও প্রতি বৈষম্য করিনি'। মণিপুর প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, 'মণিপুরের হিংসা সন্ত্রাস বা সাম্প্রদায়িক নয়, এটি জাতিগত সহিংসতা। এটি শেষ করার রাস্তা দীর্ঘ। কারণ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে যা কিছু ঘটনার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে -- একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। নির্বাচনের পর আমরা বিষয়টি নিয়ে ফের চিন্তাভাবনা করব'।
আরও পড়ুন - < Arvind Kejriwal: শরীরে বাসা বেঁধেছে ভয়ঙ্কর রোগ! সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিশেষ আর্জি কেজরিওয়ালের >
আপনি মণিপুর সফর করেছেন এবং সেখানে চার দিন কাটিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর যাওয়া উচিত ছিল? কেন তিনি করেননি? উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রীর একজন প্রতিনিধি হিসাবে সেখানে গিয়েছিলাম। আর সেখানে যা কিছু হয়েছে তা দেখার দায়িত্ব আমার'।
নকশালবাদের বিরুদ্ধে সাফল্যের প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা বলেছেন, 'গত পাঁচ মাসে ১২৫ জন নকশাল নিহত হয়েছে, ৩৫০ জন আত্মসমর্পণ করেছে। ২৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামী দু বছরের মধ্যে নকশালবাদ নির্মূল হয়ে যাবে'।
মোদী ৭৫ বছর বয়সে অবসর নেবেন না। এই ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান বিজেপির। কেজরিওয়ালের দাবি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'প্রথমত, দলে এরকম কোনও নিয়ম নেই। একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যখন সেই পরিস্থিতি নেই, সেই নিয়মগুলি সেখানে নেই। আমি স্পষ্ট করে বলব, ২০২৯ সালেও প্রধানমন্ত্রী আমাদের নেতৃত্ব দেবেন'। তৃতীয় মেয়াদে মোদী সরকার ক্ষমতায় এলে কোন দফতরের দায়িত্ব সামলাবেন অমিত শাহ? এই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এই বিষয়ে মোদী সিদ্ধান্ত নেবেন। এটা আমার হাতে নেই। দল আমাকে যা বলবে তাই করব।