বিজেপি-কংগ্রেস-আপ দিল্লিতে ত্রিমুখী লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও নারাজ একে অপরকে। এরই মধ্যে নয়া দিল্লি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক নাম-না-জানা পার্টির এক প্রার্থী। এ দলের নাম আনজান আদমি পার্টি। লড়ছেন ৩১ বছর বয়সী উপেন্দ্র মিশ্র। এখানে অন্য প্রার্থীরা হলেন বিজেপির মীনাক্ষি লেখি, আপের ব্রিজেশ গোয়েল, কংগ্রেসের অজয় মাকেন। উপেন্দ্র মিশ্রের দাবি, তাঁর দল অপরিচিত (আনজান), নিপীড়িত মানুষের মঞ্চ।
"আমরা লড়ছি দুর্ভাগাদের জন্য। এদের মধ্যে যেমন রূপান্তরকামীরা রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন, সাধারণ মানুষ, অটোওয়ালারাও। আমরা এঁদের জন্য পরিবর্তন আনতে চাই।"
২০১৫ সালে তৈরি হয়েছিল আনজান আদমি পার্টি। পার্টির প্রতিষ্ঠাতা আশুতোষ বলছিলেন আম আদমি পার্টির ৪৯ দিনের সরকারই তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। "আমাদের প্রেরণা ছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর কারণেই আমরা রাজনীতিতে এসেছিলাম, তাঁর বিরুদ্ধে সংগ্রামই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।"
এ দলের সদস্যসংখ্যা অতি সামান্য, কম অর্থ নিয়ে চলতে রাজি এঁরা। বেশি আস্থা রাখেন ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারে।
উপেন্দ্র এবং আশুতোষের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে, আন্না হাজারের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন থেকে। এ আন্দোলন থেকেই আপ তৈরি হয়েছিল, ক্ষমতায় এসেছিলেন অরবিন্দ কোজরিওয়াল। ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভা ভোটে আপের সমর্থনে ঘরে ঘরে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন দুজনেই। কিন্তু আপ সরকারের ব্যর্থতা দেখে মোহমুক্ত হন দুজনেই।
উপেন্দ্র মিশ্র এক টেলিকম সংস্থায় চাকরি করতেন। রাজনীতিতে তাঁর স্বপ্নপূরণের আশায় সে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। "কেজরিওয়ালের উপর আমার আশা ছিল যে আগে হোক, পরে হোক উনি নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন। কিন্তু এবার আমি নিজেই সে সব স্বপ্ন সত্যি করার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছি।"
ভোটারদের জন্য তাঁর নিজের প্রতিশ্রুতি কী, এ প্রশ্নের উত্তরে উপেন্দ্র বলেন, তিনি কথা বলবেন আম আদমি পার্টির ব্যর্থতা নিয়ে। তাঁর কথায়, "দুর্নীতি, বেকারি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সবেতেই আপ ব্যর্থ হয়েছে।"
উপেন্দ্র অবশ্য বলছেন, তাঁর দলের আসল লক্ষ্য পরের দিল্লি বিধানসভা ভোট। "আমাদের মূল লক্ষ্য বিধানসভা ভোট, সে সময়ে আমরা আমাদের ইস্তেহার প্রকাশ করব।"
আম আদমি পার্টির সঙ্গে তাঁদের দলের নামের মিল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আশুতোষ বললেন, "সব দলের নামের সঙ্গেই পার্টি কথাটা থাকে, আদমি কথাটা এক। আর আমরা আপের মত নিজেদের পার্টির নাম ছোট করে বলি না।"
তবে পুরনো প্রেরণার ব্যাপারে তাঁদের মোহভঙ্গের বিষয়টি স্পষ্ট। দিল্লির শাসক দল ও তাঁদের কাজ নিয়ে বলতে গিয়ে উপেন্দ্র বলেন, "এ সরকারের আমলে হাল এতই খারাপ যে প্রচারে গিয়ে আমি টয়লেটে যেতে পারছি না, কারণ টয়লেট নেই। ভাবুন একবার!"
Read the Story in English