প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে 'পনৌতি' বলার জন্য কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে শোকজ করল নির্বাচন কমিশন। 'পনৌতি' শব্দের বাংলা অর্থ হল 'অপয়া'। সদ্যসমাপ্ত ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ফাইনালে ভারত হেরে যায়। সেই হারের জন্য স্টেডিয়ামে 'অপয়া' মোদীর উপস্থিতিকে দায়ী করেছিলেন রাহুল। সেই মন্তব্যের জন্যই কংগ্রেস নেতাকে শোকজের চিঠি ধরিয়েছে কমিশন।
তবে, প্রধানমন্ত্রীকে স্রেফ 'অপয়া' বলেই রাহুল ক্ষান্ত হননি। তাঁকে গরিবের 'পকেটমার' বলেছেন। পাশাপাশি, ধনীদের ঋণ মকুবের দায়েও মোদীর দিকে আঙুল তুলেছেন। বিভিন্ন রাজ্যে বর্তমান বিধানসভা নির্বাচন চলছে। সেই কারণে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি জারি আছে। তার মধ্যে রাহুলের এই সব মন্তব্যের জেরে কমিশনের কাছে নালিশ ঠুকেছিল বিজেপি। সেই নালিশের প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার শোকজের নোটিশ পাঠিয়েছে কমিশন।
যেসব রাজ্যে বর্তমানে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি জারি আছে, তার মধ্যে রয়েছে রাজস্থান। গত মঙ্গলবার সেই রাজস্থানেরই জালোরে এক সভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, 'পিএম (প্রধানমন্ত্রীকে সংক্ষেপে ডাকা হয়) শব্দের অর্থ হল পনৌতি (অপয়া) মোদী।' কেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে একথা বলছেন, ওই সভায় সেই ব্যাখ্যাও দেন কংগ্রেস নেতা। ফাইনাল যে মাঠে হয়েছিল, তা মোদীর রাজ্য আহমেদাবাদে। আর, সেই স্টেডিয়ামের নামও মোদীর নামেই। সেই প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেস নেতা বলেন, 'ভারতীয় ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপ ভালো ভাবে জিতে যেত। কিন্তু, একজন অপয়াই হারিয়ে দিল।'
আরও পড়ুন- ‘…..তাই আমরা হেরেছি’! BCCI-কে বিশেষ অনুরোধ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার
রাহুলের এই সব মন্তব্যকে স্বভাবতই ভালোভাবে নেয়নি বিজেপি। বুধবারই দলের নেতা রাধামোহন দাস আগরওয়াল, ওম পাঠকরা কমিশনের দফতরে যান। আর, কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে নালিশ করেন। রাহুলের বক্তব্যের ভিডিও তাঁরা তুলে দেন কমিশনের কাছে। তারপরই কমিশন কংগ্রেস নেতাকে শোকজ নোটিস পাঠিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য রাহুলই শুধু নন। তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কাকেও সপ্তাহখানেক আগে মোদীর বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা’ অভিযোগ করার অভিযোগে কমিশন নোটিস পাঠিয়েছে। কারণ, নির্বাচনের আচরণবিধির মধ্যেই মধ্যপ্রদেশে এক সভায় প্রিয়াঙ্কা অভিযোগ করেছেন, নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো বেচে দিচ্ছেন। আর, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড’ (ভেল)-কেও বেচে দিয়েছেন। শুধু বেচে দেওয়াই নয়। তাঁর (মোদী) ‘বন্ধুদের’ হাতে তুলে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা বঢড়া গান্ধী। প্রিয়ঙ্কার সেই অভিযোগ ‘মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন’। এমনটা দাবি করে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। তারপরই নোটিস পাঠানো হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকেও।