মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ। তারপরে দিকবদল! তৃণমূল ছেড়ে গঠন করেছিলেন নিজস্ব রাজনৈতিক পার্টি 'হামরো সিকিম'। তবে মোদি ঝড়ের দিনেই পাহাড়ি রাজ্যে হুল ফোটাতে ব্যর্থ বাইচুং ভুটিয়া। কোনও খাতা না খুলেই রীতিমতো বিধ্বস্ত ভারতীয় ফুটবল জগতের বেতাজ বাদশা।
নিজের সেরা সময়ে প্রতিপক্ষ বক্সে রীতিমতো ঘোল খাইয়ে ড্রিবল করে গোল করা রীতিমতো বাঁ-হাতের খেল ছিল বাইচুং-য়ের। তবে রাজনীতির ময়দান যে কতটা কঠিন, তা বুঝে গিয়েছেন তিনি। গোটা দেশের লোকসভা ভোট থাকলেও সিকিমে রাজ্য গঠনের নির্বাচন চলছে। সেই বিধানসভা নির্বাচনেই খালি হাতে ফিরছেন বাইচুংয়ের।
মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংয়ের সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সঙ্গে সেখানে জোর টক্কর চলছে সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা। ২৮ সিটের লড়াইয়ে দু-দলই ১৪টি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে। সেখানে কার্যত কোনও নিশানাই নেই কংগ্রেস, বিজেপি কিংবা বাইচুংয়ের সদ্য গঠিত দল হামরো সিকিম পার্টি-র।
আরও পড়ুন
সিকিমে এমনি নির্বাচনে অনেক সময় ব্যয় করেছিলেন বাইচুং। রীতিমতো ঘরে ঘরে গিয়ে তিনি 'দুর্নীতিগ্রস্ত' পবন চামলিংয়ের বিরুদ্ধে জনতার ক্ষোভকে উসকে দিতে চেয়েছিলেন। সিকিমের নিজস্ব পাওয়ার হাইড্রাল প্রোজেক্ট, বেকার সমস্যা কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থার অনুন্নয়ন- পয়েন্ট করে করে জনতাকে বুঝিয়েছিলেন তিনি। জনতার দরবারে পেশ করেছিলেন নিজস্ব 'ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম'-এর তত্ত্ব! যেখানে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে প্রত্যেক মাসে প্রতিটি রাজ্যবাসী ১৫০০ টাকা করে বার্ষিক ১৮ হাজার টাকা পাবেন-ই। সেই সঙ্গে উঠতি ফুটবলারদের জন্য একাধিক ক্রীড়া প্রকল্পেরও স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।
তবে ২৮ বিধানসভা কেন্দ্রের মতো একমাত্র লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেই প্রমাণ, বাইচুংয়ের সেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কার্যত ভোটবাক্সে কোনও প্রভাবও ফেলেনি।
তাঁর রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে পশ্চিমবঙ্গে জমি হারানো নিশ্চিত করেছেন লোকসভা নির্বাচনে, সেখানে বাইচুং-ও যেন সেই স্বপ্নভঙ্গের শরিক! অপ্রাপ্তির নিরিখে দু-জনেই দাঁড়িয়ে পড়েছেন এক-ই বিন্দুতে।