জাতিগত জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিহারে সংরক্ষণ পদ্ধতি আমূল বদলে ফেলতে চেয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সংরক্ষণ বেড়েছে তফসিলি জাতি, অনগ্রসর জাতি এবং অতি অনগ্রসর জাতির। আবার নতুন করে সংরক্ষণ চালু করা হয়েছে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্যও। গত বছর প্রকাশ জাতিগত জনগণনার রিপোর্ট অনুসারে অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণীগুলি (ইবিসি) রাজ্যের বৃহত্তম জনসংখ্যার মোট ৩৬.১ শতাংশ । এর ভিত্তিতে, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে জেডি (ইউ) এর নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট সরকার দ্রুত তফসিলি জাতি (এসসি), তফসিলি উপজাতি (এসটি), অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) এবং ইবিসিগুলির জন্য কোটা ৫০ শতাংশ থেকে থেকে ৬৫শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা করেন।
নীতীশ কুমার জানুয়ারিতে এনডিএ-তে যোগ দানের পরই জাতিগত জণগগণা, দেশব্যাপী জাত শুমারির দাবি, সবই ঠান্ডা ঘরে চলে গিয়েছে। নীতিশ কুমার যিনি জাতিগত জণগণনাকে এক সময়ে ব্যাপক ভাবে সমর্থন করেছিলেন এবং গত তিন বছর তার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি ভোট প্রচারে জাতিগত জনগণনার কোন উল্লেখ করেননি। পরিবর্তে, তিনি "দুঃশাসন বনাম সুশাসন"-এর উপর আলোকপাত করেছেন।
মুঙ্গেরের এক সিনিয়র জেডি(ইউ) নেতা বলেছেন, "মুঙ্গেরের প্রচুর ইবিসি ভোট রয়েছে। আমরা জানি যে কয়েকটি বাদে তাদের বেশিরভাগই প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামে ভোট দেবেন। লালুপ্রসাদ-রাবড়ি দেবীর শাসনকালের সঙ্গে নীতীশ কুমারের শাসনকালের তুলনা টেনে এনে মানুষের সামনে বাস্তব চিত্রটাই তুলে ধরার কাজ করছেন নীতীশ কুমার"।
স্থানীয় জেডি(ইউ) নেতা বলেছেন যে মোদীর নামেই ইবিসি, দলিত এবং মহিলা ভোটারদের ভোট দেবেন কারণ তারা কেন্দ্রের একাধিক সুবিধা রেশন এবং আয়ুষ্মান স্বাস্থ্য কার্ড থেকে উজ্জ্বলা যোজনা সব কিছু পেয়েছেন"। "জেডি(ইউ) এবং বিজেপি প্রার্থীরা মোদীর নামে প্রচার করছেন কারণ তারা জানে যে বিরোধীদের পক্ষে মুসলিম এবং যাদবদের বাইরে কোনও সামাজিক গোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করা কঠিন হবে,"
ভাগলপুর জেলার সুলতানগঞ্জ শহরে, অটোরিকশা চালক অমরেন্দ্র মন্ডল বলেন, “আমি অটোরিকশা চালিয়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় করতে পারি কারণ গ্রাম সহ রাস্তাঘাট অনেক উন্নত হয়েছে। রাজ্যের পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে বলেই আমি স্ব-নির্ভর হয়েছি।”
জাত সমীক্ষার কথা উল্লেখ করা কয়েকজনের মধ্যে একজন, ভাগলপুরের মুকেশ রাম বলেছেন "জাত শুমারি প্রকাশের পর নীতিশ কুমারের ঘোষণা অনুযায়ী কি দরিদ্র পরিবারগুলি বছরে ২ লক্ষ টাকা পাবে?" মুজাফফরপুরের উত্তরে, রাজেশ সাহানি, পেশায় স্কুলশিক্ষক বলেছেন, "নীতীশ কুমার যখন ইন্ডিয়া জোটে ছিলেন তখন তিনি জাতিভিত্তিক সমীক্ষার কথা বলছিলেন। কিন্তু তিনি এনডিএ-তে ফিরে এসেছেন, এখন তিনি জাতি শুমারি কোন কথা বলছেন না কারণ তিনি জানেন এখানে কেবল মোদী ফ্যাক্টর কাজ করবে "।
বিজেপি ওবিসি মোর্চার জাতীয় সাধারণ সম্পাদক নিখিল আনন্দ জোর দিয়েছিলেন যে নরেন্দ্র মোদী এই নির্বাচনে "একাই বড় ফ্যাক্টর" । “আমাদের অন্য কোনো সমস্যার প্রয়োজন নেই। মোদী একাই সমস্ত সামাজিক গোষ্ঠীর সমষ্টিগত আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করেন।” পূর্ণিয়ার বৈরগাছি গ্রামের এক দলিতের কথায়, "বিনামূল্যে রেশন এখানে একটা বড় ফ্যাক্টর। । যারা গরীবদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে অবশ্যই তাদেরই মানুষ সমর্থন করবে"।