মালদায় অমিত শাহর সভায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে চ্য়ালেঞ্জ ছুঁড়লেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। মুকুলের ঘোষণা, "সামনের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২০টির বেশি আসন পেলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। আমি আর রাজনীতির ময়দানেই থাকব না।" শুধু তাই নয়, তাঁর উপলব্ধি, "আমি ২০০৮, ২০০৯, ২০১১ সাল দেখেছি। এখন বাংলার মানুষের চেহারায়, কথাবার্তায় স্পষ্ট, তাঁরা পরিবর্তন চান। পরিবর্তনের প্রত্য়াবর্তন চাইছেন আপামর বাংলার জনগণ।"
এই সভাতেই "পিসি-ভাইপোর" প্রতি তোপ দেগেছেন একসময়ের মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সহকারি। মুকুলের দাবি, "পিসি-ভাইপোর সংস্থা চলছে এখানে। পিসি ম্য়ানেজিং ডিরেক্টর, ভাইপো ডিরেক্টর।" এর আগে অনেক ক্ষেত্রেই মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে শুধু আইনি নোটিস পাঠানো নয়, মামলাও করেছেন তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি, সাংসদ, তথা মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। এদিন ফের বিজেপির জাতীয় কর্ম সমিতির এই সদস্য় বলেন, "আমি তো বলছি ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে আড়াই লাখের বেশি লোক হয়নি। লোককে মিথ্য়া কথা বলা হচ্ছে যে ২৫ লক্ষ লোক হয়েছে। এবার আমার বিরুদ্ধে মামলা করুক।"
আরও পড়ুন: ভয় পেয়ে ভুল বকছেন অমিত শাহ, প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের
বিজেপি বারেবারে ঘোষণা করা সত্ত্বেও ব্রিগেডে সভা করতে পারছেন না দলীয় নেতৃত্ব। তৃণমূল কংগ্রেসের পর সিপিএমও ব্রিগেডে সমাবেশ করতে চলেছে ৩ ফেব্রুয়ারি। বিজেপি শেষমেশ পরিকল্পনা করেছে, রাজ্য়ব্য়াপী জনসভা করবে, যেখানে প্রধান বক্তা হবেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। এদিন তারই সূত্রপাত করল পদ্ম শিবির। মুকুল বলেন, "আজ এখানে প্রায় ২ লক্ষ লোক এসেছেন। এটা মিনি ব্রিগেডে পরিণত হয়েছে। এমন মিনি ব্রিগেড হবে রাজ্য় জুড়ে।" লোকসভা ভোটে নিজের ভোট নিজেই দিতে পারবেন বলে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেন তিনি। কড়া নিরাপত্তা ব্য়বস্থা থাকবে বলেও তিনি কথা দেন। তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবাধে ভোটদান হলে পাঁচটি জেলা পরিষদ দখল করত বিজেপি।
তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মুকুল। দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড বলেই সর্বত্র পরিচিত ছিলেন। তিনিই আগামী লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্য়ে বিজেপির অন্য়তম কান্ডারী। রাজনৈতিক মহলের মতে, মুকুল রায়ের এখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। বিষ্ণপুরের তৃণমূল সাংসদ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মুকুল রায়ের হাত ধরে। এখনও অনেকেই অপেক্ষায় আছেন বলে তাঁর দাবি। তবে প্রকাশ্য় সভায় এমন বক্তব্য় পেশ করে তৃণমূল নেতৃত্বের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছেন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছে। পাশাপাশি অমিত শাহ এরাজ্য়ে যে লোকসভার আসনে জয়ের লক্ষ্য়মাত্রা রেখেছেন তার সঙ্গেও সামঞ্জস্য় রাখলেন তিনি।