ভোটের মুখে চিটফান্ড তদন্তে গতি বাড়িয়েছে সিবিআই-ইডি। সমন পাঠিয়ে তলব করা হচ্ছে একের পর এক তৃণমূল নেতাকে। যা 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে কমিশনকে চিঠি দিয়ে নালিশ করল তৃণমূল। একই মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের কেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো ডাকছে না? কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে এই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। সিবিআই-ইডি, এনআইএ ও আইটি-কে জরুরি নির্দেশ দেওয়ার জন্যও কমিশনে আবেদন জানিয়েছে জোড়া-ফুল শিবির। এছাড়া, বাংলার ভোটে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের ৩০ কোম্পানি রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েনেরও প্রতিবাদ করে কমিশনের দ্বারস্থ তৃণমূল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বাংলার ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ডেরেক।
তৃণমূলের তরফে কমিশনে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ, 'গত পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে যেসব মামলা চলছে তার তদন্তে ভোটর আগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তৃণমূল নেতা, প্রার্থী, মুখপাত্রদের সমন জারি করা হচ্ছে। অথচ, একই অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপির কোনও প্রার্থী, নেতা বা মুখপাত্রকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো ডাকছে না। স্পষ্টতই যা প্রমাণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার যে দল পরিচালনা করছে তারা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করছে। ভোটের আগে তৃণমূল সম্পর্কে ভুল বার্তা দিতেই এই কাজ করা হচ্ছে।'
'বর্তমানে পুলিশ কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভোটের আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ থাকাকালীন সিবিআই, ইডি সহ কন্দ্রীয় সংস্থাগুলো যাতে কোনও জবরদস্তি সিদ্ধান্ত না নেয় সেই বিষয়ে তাদের নির্দেশ দিক কমিশন।'
এছাড়াও বলা হয়েছে, 'বাংলার ভোটে প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসছেন। প্রচারে সামিল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। প্রচারে এসে তাঁরা সরকারি দফতর, গাড়ি ব্যবহার করছেন, যা ক্ষমতার অপব্যবহার। কমিশন এই দিকে নজর না দিলে আদর্শ আচরণবিধি কার্যত হাস্যকর হয়ে উঠবে।'
পৃথক একটি চিঠিতে কমিশনে তৃণমূল জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ বা বিজেপি-শাসিত অন্য কোনও রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য সশস্ত্র পুলিশবাহিনী আনা চলবে না। এক্ষেত্রে ভিন রাজ্যের পুলিশ বিজেপির হয়ে কাজ করতে পারে। কমিশন অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশ ও বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে বাংলার ভোটে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন বন্ধ করুক।
ভোট ঘিরে বঙ্গ উত্তাপ তুঙ্গে। তার আগে বিজেপির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ভোটের কাজে অপব্যবহারের অভিযোগ জানিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তৃণমূলের চাপ বৃদ্ধির কৌশল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন