করোনার অতিমারীত্বে দেশে বাতিল হয়েছিল একাধিক উৎসব, একাধিক উদযাপন। যাপনে রাশ টেনেছিল কেন্দ্র থেকে রাজ্য। কিন্তু গণতন্ত্রের এই উৎসবকে নিয়ম বেড়াজালেও রাখলেও তা মানা হচ্ছে কোথায়? পশ্চিমবঙ্গে চলছে আট দফার ভোট। যার মধ্যে শনিবার শেষ হয়েছে পঞ্চম দফার ভোট। বুথে বুথে যে ছবি দেখা গেল তা অনেক বেশি চিন্তার।
বাংলায় ক্রমশ কঠিন হচ্ছে কোভিড পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় আট হাজার ছুঁইছুঁই। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চম দফার বুথে বুথে কোভিড বিধি ভঙ্গের চিত্রই প্রকট হল। সামাজিক দূরত্ব বিধি দূরে, তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে না, মাস্ক বিধিতেও অনিয়ম। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে দিয়েই হুড়মুড়িয়ে ঢুকছেন ভোটাররা।
আরও পড়ুন, রাজ্যে বেলাগাম করোনা, দৈনিক আক্রান্ত ৭,৭১৩ জন, মৃত ৩৪
কামারহাটিতে সকাল সাড়ে ৯টায় সাগর দত্ত হাই স্কুলে দেখা গেল মুখে নয়, হাতে মাস্ক ঝুলিয়ে রাজ্য পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে দিয়ে 'সদর্পে' বুথে ঢুকছেন কিছু ভোটার। পুলিশরা তথ্য ও পরিচয়পত্র দেখলেও মাস্ক না থাকা নিয়ে কোনও প্রশ্নই করলেন না। এক কনস্টেবলের কথায়, আমার কাজ হল ভোটারদের প্রতি নজর রাখা এবং বুথের দিক নির্দেশনা দেওয়া। মাস্ক নিয়ে কিছু বলতে বলা হয়নি।"
বেশিরভাগ বুথেই নেই কোনও তাপমাত্রা মাপার ডেস্ক। বুথের ভিতরে চক দিয়ে সামাজিক দূরত্ব করা থাকলেও তা মানছে কে! একজন ভোটারের কথায়, "আমরা মাস্ক পরে এসেছি। ভিতরে শুধু গ্লাভস দিচ্ছে। কেউ তা পরতে অস্বীকার করলে আর জোর করা হচ্ছে না। অনেক আধিকারিকদের মুখেও তো মাস্ক নেই।" একজন বিজেপি কর্মী তো বলেই ফেললেন, "দেখুন সকালে মাস্ক পরেছি। কিন্তু এখন খুব গরম তাই পরছি না। আর কিছু বলার আছে?"
আরও পড়ুন, বায়ুবাহিত করোনার শক্তি বেশি! আরও সাবধান হওয়ার আর্জি গবেষকদের
প্রসঙ্গত, করোনাকালের নির্বাচনী বাংলায় ভোট গ্রহণের সময় কঠোর কোভিড বিধি ঘোষণা করেছিল কমিশন। রাজনৈতিক প্রচার থেকে জনসমাগম, বুথে বুথে নজরদারী, সম্প্রতি কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক একাধিক 'কঠোর বার্তা' প্রকাশিত হল। নির্বাচনী চিত্র কিন্তু অন্য কথা বলছে। মারাত্মক আকার ধারণ করছে কোভিডও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বাংলায় দৈনিক করোনা আক্রান্ত পেরোতে চলেছে ১০ হাজার।
উৎসব শেষে ভাঙা সাজগোজ, খালি মন্ডপ দেখে গলা বুঝে আসে সকলেরই। গণতন্ত্রের উৎসবের দৌলতে পরিবার খালি হোক চায় না এ বাংলা!!
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন