ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই পড়েছে এরাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য শুক্র ও শনিবার ভিভিআইপি থেকে শুরু করে ছোটখাট নেতার একাধিক সভা, মিছিল বাতিল করেছে সবকটি রাজনৈতিক দলই। একদিকে রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর সভার সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। মেদিনীপুরে সভা বাতিল করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কানহাইয়া কুমারের জনসভা করার কথা ছিল ব্যারাকপুরে। সেই সভা নিয়েও রীতিমত অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রাজ্যে সমস্ত উড়ান বাতিল করেছে অসামরিক বিমান পরিবহণ দপ্তর।
শুক্রবার সকাল থেকে ওড়িশায় তান্ডব চালাচ্ছে ফণী। এদিন রাতে ফণীর বাংলায় প্রবেশ করার কথা। সেই আশঙ্কায় কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান বন্ধ রাখা হয়েছে শুক্রবার দুপুর থেকেই। এমনকী রাজ্যে কোনও ধরনের হেলিকপ্টারের উড়ানের ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৫ মের জনসভা বাতিল হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, ওই দিন নরেন্দ্র মোদীর জনসভা হচ্ছে না। পাঁচ তারিখের পরিবর্তে জনসভা হবে ৬ মে, তমলুক ও ঝাড়গ্রামে। এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কেশিয়ারির সভাও বাতিল হয়েছে।
শুক্রবার চন্দ্রকোনার ক্ষেত্রপাল ময়দানের জনসভা বাতিল করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সভা করার কথা ছিল শুক্রবার দুপুরে। এদিন সকালে টুইট করে মমতা লেখেন, "ঘূর্ণিঝড় ফণীর আশঙ্কায় আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সমস্ত নির্বাচনী সভা বাতিল করলাম। দিনভর আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। সকলকে সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সকলে সাবধানে থাকুন, নিরাপদে থাকুন আগামী ২ দিন।’’ গোপীবল্লভপুর, বেলপাহাড়ী সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় জনসভা ছিল মমতার।
বিহারের বেগুসরাইয়ে সিপিআই প্রার্থী করেছে কানহাইয়া কুমারকে। জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতির কেন্দ্রে নির্বাচন সম্পূর্ণ। এবার দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে সভা করার ডাক পড়ছে এই তরুন কমিউনিষ্ট নেতার। স্বভাবতই এরাজ্যে তাঁর বেশ কয়েকটি কর্মসূচি রয়েছে। ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ব্যারাকপুরে কানহাইয়ার সভার কর্মসূচি চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু ফণীর জেরে দুর্যোগের কারণে ওই কর্মসূচি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মালদা ও মুর্শিদাবাদের মতো কংগ্রেস দুর্গে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তা সত্ত্বেও রণে ভঙ্গ দিতে রাজি নয় রাজ্য কংগ্রেস। এরাজ্যে প্রচারে আসতে চলেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীও। অন্য সর্বভারতীয় নেতৃত্বেরও এরাজ্যে এসে প্রচার করার কথা রয়েছে। শুক্রবার কলকাতা ও ব্যারাকপুরে সভা করেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদ। কিন্তু বারাসাত, বসিরহাট ও হাওড়ায় তাঁর কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এক সঙ্গে বেশি সভা করতে হলে হেলিকপ্টার ছাড়া সম্ভব নয়। রাজ্য যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রোহন মিত্র জানান, সলমন খুরশিদের কিছু সভা বন্ধ করে দিতে হয়েছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরের সভাও বাতিল করা হয়েছে।