লোকসভা নির্বাচনে ভোটপ্রচারে বাংলা থেকে রাহুল গান্ধীকে চরম কটাক্ষ ছুঁড়লেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আমেঠি-রায়বরেলি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। মায়ের ছেড়ে যাওয়া রায়বরেলি আসন থেকেই প্রার্থী হলেন রাহুল গান্ধী। রায়বরেলি আসন থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে চলেছেন সোনিয়া-তনয়। এদিকে আমেঠি থেকে এবার আর গান্ধী পরিবারের কোন সদস্য লড়াইয়ে নেই। আমেঠি আসন থেকে কংগ্রেস কিশোর লাল শর্মাকে টিকিট দিয়েছে। এনিয়ে রাহুলকে নিশানা করে মোদী বলেন, 'ভয় না পেয়ে লড়াইয়ের ময়দানে আসুন'।
শেষ মুহূর্তে কংগ্রেসের তরফে জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রায়বরেলি ও আমেঠিতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী সকাল ১০টায় মনোনয়ন পেশ করবেন কিশোরী লাল শর্মা। তাঁর মনোনয়ন পেশের সময় তাঁর সঙ্গে থাকবেন রাহুল গান্ধী। এরপর দুপুরে রায়বরেলি আসনে ভোটে লড়ার জন্য মনোনয়ন পেশ করবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল নিজে। এরই পাশাপাশি এবারেও কেরলের ওয়াইনাড থেকেও ভোটে লড়ছেন রাহুল। ইতিমধ্যেই সেই আসনে ভোট পর্ব শেষও হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে বলেন, তিনি ভয় পাচ্ছেন এবং এক আসন থেকে অন্য আসনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে একটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “আমি বলেছিলাম ওয়ানাডে 'শাহজাদা নির্বাচনে হেরে যাবেন। সাংসদ পদ হারানোর ভয়ে তিনি এক আসন থেকে অন্য আসনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। আমেঠিতে তিনি এতটাই ভয় পেয়েছেন যে তিনি আমেঠি থেকে পালিয়ে গিয়ে রায়বেরেলিতে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। এরাই আবার মানুষকে বলে 'ডরো মাত (ভয় পেয়ো না)'। আমিও তাকে মনেপ্রাণে বলতে চাহি 'আরে ডরো মাত, ভাগো মাত ('ভয় পেয়ো না, পালিয়ে যেও না)'।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার তৃণমূক কংগ্রেস কম আসন জিতবে বলে দাবি করেন মোদী। তিনি আরও দাবি করেছেন যে টিএমসি বাংলায় তাদের ভোটব্যাঙ্ক রক্ষা করতে তুষ্টির রাজনীতি করছে'।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Teacher Recruitment Scam) প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করেছে কলকতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ২০১৬ সালের SSC-র গোটা প্যানেলটাই বাতিল করেছে উচ্চ আদালত। এবার চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ালেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। শুক্রবার বর্ধমানের জনসভা থেকে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে বিরাট আশ্বাস নমোর।
চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের কী আশ্বাস মোদীর?
“নিয়োগ দুর্নীতির জেরে যে যোগ্য শিক্ষকরা চাকরি হারালেন তাঁদের জীবন কতটা সংকটে পড়েছে তা আমি বুঝি। আমি রাজ্য BJP সভাপতিকে পরামর্শ দিচ্ছি, যাঁরা নির্দোষ, যাঁরা সত্যিই শিক্ষকের চাকরির জন্য উপযুক্ত ছিলেন তাঁদের সাহায্য করতে হবে। পাপীদের পাপের জন্য তাঁরাও ফেঁসে গিয়েছেন। BJP সভাপতিকে বলছি, দলের তরফে যোগ্য শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ান। একটি লিগাল সেল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুন। এর ফলে তাঁদের লাভ হবে যাঁরা উপযুক্ত হয়েও দুর্নীতির জেরে ফেঁসে গিয়েছেন।”
মোদী এদিন আরও বলেন, “BJP যোগ্য শিক্ষকদের আইনি সহায়তা দেবে। তাদের ন্যায্য বিচারের জন্য লড়বে। নির্বাচন চলতে থাকলেও যোগ্য শিক্ষকদের সঙ্গে থাকবেন BJP নেতারা। যাঁরা পাপ করেছেন তাঁরা সাজা পাক। যোগ্য শিক্ষকদের পাশে থাকবে বিজেপি, এটা মোদীর গ্যারান্টি। তৃণমূলের তোলাবাজি চলতে দেব না। কেমন দুর্নীতি হয়েছে, বান্ডিল-বান্ডিল নোট মিলেছে। নোট গুণতে গুণতে মেশিন ক্লান্ত হয়ে গেছে। এত টাকা মেরে নিয়েছে।”
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্বাসের সমালোচনায় সরব বামেরা। CPIM নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য এদিন সংবাদমাধ্যমে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কোভিড চলাকালীন যে ৪ কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন, তাঁদের চাকরি দেননি। তখন নির্বাচন ছিল না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। মমতা ব্যানার্জির সরকার যখন এত বড় বড় দুর্নীতি করছিল, তখনই CBI তদন্তের গতি শ্লথ করে দেন কেন? CBI, ED অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করছে। মমতা ব্যানার্জিকে একবারও জেরা করছে না, যিনি এত অপরাধে অভিযুক্ত। ভোটর সময়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। চাকরিহারা যোগ্যদের হয়ে মামলা লড়বে ABTA”।