ভাটপাড়া উপনির্বাচন ঘিরে রবিবার বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাটপাড়া কেন্দ্রের কাঁকিনাড়া এলাকা। ভোট পরবর্তী হিংসার আশঙ্কায় সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভাটপাড়ায় নির্বাচন কমিশনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করল স্থানীয় প্রশাসন। এই ধারা চলাকালীন এলাকার যে কোনো জায়গায় চার জনের বেশি ব্যক্তির জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "সোমবার বিকেলের পর থেকে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।" প্রসঙ্গত, রবিবার বিজেপি-তৃণমূল দুই দলের সংঘর্ষে বোমাবাজি-গুলির লড়াইয়ে অশান্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। সমগ্র ঘটনা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশনের নজরদারি পর্যবেক্ষকের সিদ্ধান্তের পরেই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীপদ থেকে পদত্যাগ করে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন "বাহুবলী নেতা" অর্জুন সিং। লোকসভা নির্বাচনে তিনি ব্যারাকপুরে বিজেপির হয়ে লড়াই করেছেন তৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদীর বিরুদ্ধে। এদিকে ভাটপাড়ায় বিধায়ক পদ পূরণ করতে উপনির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা ছিল। সকলের নজরে থাকা ভাটপাড়ার এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করেন মমতার বিশ্বস্ত সৈনিক মদন মিত্র। অপরদিকে তাঁর বিপক্ষে বিজেপির হয়ে লড়াই করে স্বয়ং অর্জুন সিংয়ের পুত্র পবন সিং।
আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী সংঘর্ষের জের, কাঁকিনাড়ায় রেল অবরোধ
এদিকে রবিবারের ঘটনার পর সোমবারেও গোটা ভাটপাড়া এলাকায় এক থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সোমবার সকালে ভোট পরবর্তী সংঘর্ষ, বোমাবাজি, ঘরবাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে কাঁকিনাড়া স্টেশনে রেল অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, রবিবার দুপুরে তাঁর অফিস ও বাড়িতেও হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। তিনি বলেন, "সেনাবাহিনীর হাতে এলাকার দায়িত্ব দেওয়া উচিত এই মুহুর্তে। যত সময় যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত খারাপ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিকভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না এখানকার সরকার। বহু বিজেপি সমর্থকেরাও আক্রান্ত হচ্ছেন।"
বিজেপির এই অভিযোগের ভিত্তিতে মদন মিত্র বলেন, "অর্জুন সিং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে।" এদিকে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেন মদন মিত্র। মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া হোক আগে এই দাবি নিয়ে মদন মিত্র বলেন, ভাটপাড়াকে অশান্ত করার পিছনে রয়েছে কিছু বহিরাগত যারা ভোটের দিন এলাকায় প্রবেশ করেছিল। নিজস্ব ঢঙে বললেন, "আমায় যদি কাল এলাকায় ঢুকতে দেওয়া না হয়, তাহলে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করব আমি"।
এই গোটা ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, এই মুহুর্তে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য এলাকায় বিশাল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে, জানিয়েছেন এক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তা।
Read the full story in English