সুশাসন মানেই তিনি। গত ১৫ বছরে তাঁকে ছাড়া সরকার গঠন হয়নি। সেই নীতীশ কুমার ফের ক্ষমতায় ফিরলেন। তবে তাঁর ম্যাজিক কিছুটা ফিকে এবার। এনডিএ জোট জিতলেও বড় দল হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। অন্যদিকে, একক ভাবে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে জেডিইউ। তবে নীতীশের বড় জয় হল, প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা, বুথফেরত সমীক্ষার ফল উল্টে দিয়ে ক্ষমতায় ফিরলেন তিনি।
তবে এখানেই একটা প্রশ্ন আরও জোরালো হচ্ছে। ৪৩টি আসন পাওয়া জেডিইউর জন্য নীতীশকে কি মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়বে বিজেপি? বিজেপি একাই পেয়েছে ৭৪টি আসন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, নৈতিকভাবে নীতীশ আগেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়েছিলেন নীতীশ। ৯ মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান জিতন রাম মাঝি। লোক জনশক্তি পার্টির সঙ্গে সংঘাতের জেরে বিজেপির অবস্থান এখন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। একটি আসনে জেতা চিরাগ পাসওয়ানের দল যদি এনডিএ শিবিরে ফিরে আসে তাহলে কি তা মেনে নেবেন নীতীশ? কারণ জেডিইউয়ের আসন কমার অন্যতম কারণ এলজেপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চিরাগ জেডিইউয়ের যা ক্ষতি করার দরকার ছিল সেটা করেছেন। এবার চিরাগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বিজেপির উপর নির্ভর করছে। তবে একটা কথা বলতেই হয়, নীতীশের বরাবরের ভোটব্যাঙ্ক মহিলারা এবং মহাদলিতরা কিন্তু মুখ ফেরাননি। সাইলেন্ট ভোটাররা নিজের কাজ করেছেন। সেটাই নীতীশের স্বস্তি। নাহলে জাতপাত এবং ভোট কাটাকাটির অঙ্কে আরও নিচে নামতে পারত জনতা দলের আসন। দলের জাতীয় মুখপাত্র কে সি ত্যাগী বলেছেন, আমাদের নেতা নীতীশ কুমারকে বুথফেরত সমীক্ষার ফলে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রমাণ করলেন সুশাসন সবসময় জয় নিশ্চিত করে। যে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার প্রতিষ্ঠান বিরেধিতার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সহযোগিতায় অসম্ভব সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত বিহারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ড. শ্রীকৃষ্ণ সিংয়ের পথে হেঁটে চতুর্থবার সরকার গড়ছেন নীতীশ। বিজেপি সূত্রে খবর, নীতীশই হবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু নম্বর অন্য কথা বলছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি এনডিএ। ম্যাজিক ফিগার থেকে তিনটি আসন বেশি। ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে বিরোধী মহাজোট। নীতীশের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, শরিক দলের সঙ্গে সামান্য আতান্তর হলেই তিনি নৈতিকতা বজায় রেখে সরে এসেছেন। এক্ষেত্রেও এমনটা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই!
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন