সংক্রমণকে সঙ্গী করেই ভোটযজ্ঞে কলকাতার একমাত্র লেডি লিয়াজিয়ন অফিসার
এই অফিসারের কাজ হল কমিশন নিযুক্ত আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষকদের (expenditure observer) ছায়াসঙ্গী হিসেবে কাজ করা। আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষক যেহেতু অন্য রাজ্যের আইআরএস, তাই বাংলার ভূগোল সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল নয়।
এই অফিসারের কাজ হল কমিশন নিযুক্ত আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষকদের (expenditure observer) ছায়াসঙ্গী হিসেবে কাজ করা। আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষক যেহেতু অন্য রাজ্যের আইআরএস, তাই বাংলার ভূগোল সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল নয়।
সার্কিট হাউজে ভোটের কাজে বেরনোর আগে সৌম্যা শীল। ছবি: ফেসবুক/ সৌম্যা
রাত পেরোলেই বাংলার ৩৪টি আসনের সপ্তম দফার ভোট। কাল ব্যালটবন্দি হবে রাজ্যের একাধিক বিদায়ী মন্ত্রী ও তারকা প্রার্থীর ভাগ্য। প্রায় একমাস ধরে চলা রাজ্যের ভোট উৎসবের মধ্যে চোনার মতো করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। এই ঢেউয়ের বলি রাজ্যের একাধিক প্রার্থী। পজিটিভ হয়ে চিকিৎসাধীন আরও একাধিক। এই আবহে টিকাকরণ করিয়ে ভোট যুদ্ধে নামানো হয়েছে ভোটকর্মীদের। কিন্তু তাতেও শঙ্কা কাটছে না।
Advertisment
এদিকে, গত প্রায় দু’মাস যাবৎ সঙ্কট আবহেই ভোটের কাজে মগ্ন এ রাজ্যের একাধিক ভোটকর্মী। করোনা সংক্রমণ শঙ্কা শিয়রে রেখেই গণতন্ত্রের উৎসবকে সমৃদ্ধ করতে দিনরাত এক করছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ডাবলুবিসিএস সৌম্যা শীল। কমিশন তাঁকে লিয়াজিয়ন অফিসার হিসেবে নিয়োগ করেছে। এবার ভোটে মহিলা ভোটার এবং মহিলা ভোট কর্মীদের যোগদান চোখে পড়ার মতো। আর এই সৌম্যা শীল এবারের ভোটে কলকাতায় কমিশন নিযুক্ত একমাত্র মহিলা লিয়াজিয়ন অফিসার।
হিসেব পরীক্ষার কাজে মগ্ন সৌম্য শীল। ছবি: ফেসবুক
এই অফিসারের কাজ হল কমিশন নিযুক্ত আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষকদের (expenditure observer) ছায়াসঙ্গী হিসেবে কাজ করা। আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষক যেহেতু অন্য রাজ্যের আইআরএস, তাই বাংলার ভূগোল সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল নয়। এ রাজ্যের আর্থ-সামাজিক পরিচিতি সম্বন্ধেও তাঁর অজ্ঞ। আর এই অজ্ঞতা দূর করার দায়িত্ব লিয়াজিয়ন অফিসারের। এলাকা টহলদারির জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী যেমন রাজ্য পুলিশের ওপর নির্ভরশীল। ঠিক একই ভাবে আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষকরা লিয়াজিয়ন অফিসারের ওপর নির্ভরশীল। আর গত দু’মাস ধরে সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন এই তরুণী ডাবলুবিসিএস।
Advertisment
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ফোনে এই ভোটকর্মী জানান, গত সপ্তাহে তাঁর বোনের করোনা ধরা পড়েছে। তিনিও ভোটের কাজে বাড়ির বাইরে। যদিও এখনও পর্যন্ত করোনা নেগেটিভ তিনি। তাই পরিবারের কথা ভেবে গত কয়েকদিন তিনি সার্কিট হাউজকেই নিজের ঘরবাড়ি বানিয়েছেন। সেখান থেকে চলছে রাজ্যের চারটি বিধানসভার ভোটে আয়-ব্যয়ের হিসেব কষা। কমিশন নিযুক্ত আয়-ব্যয় পর্যবেক্ষক তথা আইআরএস অফিসার সংযোগিতা নাগপালের লিজিয়ন অফিসার সৌম্যা। তাঁর অধীনে দক্ষিণ কলকাতার চারটি বিধানসভা কেন্দ্র রাসবিহারী, ভবানীপুর, বালিগঞ্জ, কলকাতা বন্দর।
আর এই চারটি কেন্দ্রেই হেভিওয়েট প্রার্থীরা সোমবার নামছেন ভাগ্য অন্বেষণ। কমিশন তাঁকে যে সুযোগ দিয়েছে, প্রথম মহিলা লিজিয়ন অফিসার হিসেবে কাজ করে কেমন লাগছে? সৌম্যা বলেন, ‘দীর্ঘ একমাসের ভোট পার্বণে আমার অনেক সহকর্মী করোনা আক্রান্ত। ফলে যারা এখনও আক্রান্ত হয়নি, তাঁদের ওপর অত্যাধিক চাপ বাড়ছে। তাই পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবে বাড়ি থেকে বাইরে থেকে বাইরে বেরিয়ে সবদিক সামলাতে হচ্ছে।‘
পরিবারের এক সদস্য করোনা আক্রান্ত। বাকি দুই জন প্রবীণ সদস্য। সহকর্মীরা আক্রান্ত, এত প্রতিবন্ধকতাও তাঁকে দমাতে পারেনি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের এক অঙ্গরাজ্যের ভোটযজ্ঞে নিজেকে সঁপে ভোটের আগের দিন বেশ ফুরফুরে সৌম্যা শীল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।