প্রথম দফার ভোটেই অনিয়ম, ছাপ্পাভোটের অভিযোগে কার্যত বিপর্যস্ত হতে হল নির্বাচন কমিশনকে। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পশ্চিম ত্রিপুরার কেন্দ্রে ১৩১টি বুথে পুননির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, যা একটি রেকর্ডও বটে।
'ভোট পর্ব বিকৃত হয়েছে' এই মর্মে নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার এবং প্রাক্তন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুৎসি। যিনি ২২ এপ্রিল ত্রিপুরার নির্বাচনে বিশেষ পরিদর্শক ছিলেন। ১৩১টি কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন করানোর দাবি জানান তিনি।
বিভিন্ন সূত্রের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী এবং উপযুক্ত দিন পাওয়া গেলে তবেই পুনর্নির্বাচন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন উত্তপ্ত বীরভূম, ‘আঙুল কাটল’ বিজেপির পোলিং এজেন্টের
লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটে পশ্চিম ত্রিপুরায় ১ হাজার ৬৭৯টি বুথে ভোট হয়েছে। আইএএস অফিসার এবং প্রাক্তন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার ভিনোদ জুৎসির দেওয়া প্রতিবেদন এবং বিরোধী দলের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে। তদন্ত শেষে দেখা যায় প্রায় ৮ শতাংশ বুথে ভোট বাতিলের দাবি উঠেছে, যা যথার্থ বলে মনে করেছে নির্বাচন কমিশন। ত্রিপুরা কংগ্রেস ও সিপিআইএম, দু পক্ষেরই অভিযোগ, প্রথম দফার এই ভোটে বিপুল সংখ্যক "ছাপ্পা ভোট" পড়েছে।
তদন্তের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন ১৮ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত পূর্ব ত্রিপুরায় ভোটপর্ব স্থগিত করে দেয়। শুধু তাই নয়, পূর্ব ত্রিপুরাতে ভোট প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রাক্তন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার ভিনোদ জুৎসিকে। সিপিআইএমের তরফ থেকে ৮৪৬টি বুথে 'ছাপ্পাভোটের' অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুর্যেওয়ালা, অভিষেক মানু সিংভি এবং জয়রাম রমেশ প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে তদন্তের দাবি তুলেছেন।
আরও পড়ুন, আইসিসের নয়া ভিডিও: কী বার্তা দিতে চায় আল বাগদাদি
এদিকে, তদন্তের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন বুথ দখলের সময় অবহেলার অভিযোগে তিন জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং দু'জন পর্যবেক্ষক সহ মোট পাঁচ জনকে ভোট প্রক্রিয়ার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিন সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করার দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের ভিত্তিতে এই নির্দেশ জারি করেছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং অফিসার সন্দীপ নামদেও বলেন, "বিশেষ পর্যবেক্ষক এবং বিরোধী পক্ষের অভিযোগ, কিছু নথি এবং ভিডিও ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে এই আধিকারিকরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হননি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে"।
নির্বাচন কমিশনের নোটিসে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, নির্বাচনী এলাকায় বুথ দখলে সহায়তা করেছেন প্রিসাইডিং অফিসাররা, শুধু তাই-ই নয়, বুথ দখলের পর যে 'ছাপ্পাভোট' পর্ব চলেছে তাতেও সায় ছিল অফিসারদের।
Read the full story in English