New Update
রাজ্যে বহরমপুর সহ আটটি লোকসভা কেন্দ্রে সোমবার নির্বাচন। এছাড়া এদিন ভোট হবে কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বর্ধমান দুর্গাপুর, বর্ধমান পূর্ব, আসানসোল, বোলপুর ও বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে। এর মধ্যে সকলের নজর রয়েছে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে। বহরমপুরে কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে পরাজিত করতে তৃণমূল নেত্রী মুর্শিদাবাদে একাধিক সভা করেছেন। আসানসোলে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। এই দুই বিরোধী প্রার্থী ২০১৪ লোকসভায় জয়ী হয়েছিলেন। এই নির্বাচন তাদের কাছে এবার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। বাকি ৬টি আসনই ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। যদিও বীরভূমের দুটি লোকসভা কেন্দ্রের মূল কাণ্ডারী হলেন ওই জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে এখানে বিজেপি লড়াকু দুধকুমার মণ্ডলকে প্রার্থী করে বাজিমাত করতে চাইছে।
Advertisment
সোমবারের নির্বাচনে সব থেকে নজরকাড়া কেন্দ্র বহরমপুর। মুর্শিদাবাদ জেলায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছেন তৃণমূলের তরুণ তুর্কি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কংগ্রেস গড় বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদ জেলার কংগ্রেসের সব স্তরের সংগঠন ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন শুভেন্দু। তা সত্ত্বেও বহরমপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী একটা বড় ফ্যাক্টর। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী করেছে তাঁরই একসময়ের শিষ্য অপূর্ব সরকারকে। এই কেন্দ্রে সিপিএম কোন প্রার্থী দেয়নি। প্রার্থী দিয়েছে বাম শরিক আরএসপি। কিন্তু সিপিএমের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের কমিটেড ভোটারদের কংগ্রেসকে ভোট দিতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে অধীর চৌধুরী একটা বড় সমর্থন পাচ্ছেন সিপিএমের। দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছেন মুর্শিদাবাদের রবিনহুড।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৪ তে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। এবার এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে অভিনেত্রী মুনমুন সেনকে। সুচিত্রা তনয়াকে বাঁকুড়ার আসন থেকে আসানসোল কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী। এখানকার লড়াই জোরদার হবে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তার পাশেই রয়েছে বর্ধমান দুর্গাপুর আসনটি। দার্জিলিঙের প্রাক্তন সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়াকে বিজেপি এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে। আলুওয়ালিয়া প্রার্থী হওয়ায় দর বেড়ে গিয়েছে এই কেন্দ্রের। এখানে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা। রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী আভাস রায় চৌধুরী। গত পাঁচ বছরে তেমনভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠেনি দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। এই কেন্দ্রে বিস্তর গ্রামীণ এলাকাও রয়েছে। সিপিএম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরী কতটা ভোট কাটতে পারেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের অধিকাংশই গ্রামীণ এলাকা।
রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর নদিয়া জেলার এই দুটি আসনে এবার দুই ফুলের জোরদার লড়াই। রানাঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে রূপালী বিশ্বাসকে। কৃষ্ণগঞ্জ এর বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হয়েছিলেন। রূপালী তাঁরই স্ত্রী। অন্যদিকে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে মহুয়া মৈত্রকে। তবে এই দুটি লোকসভা কেন্দ্রে আসন ধরে রাখা ঘাসফুলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ, এমনটাই অভিমত রাজনৈতিক মহলের। চতুর্থ দফায় এই ৮ লোকসভা আসনের প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তবে দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির তুলনায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন অনেক বেশি মজবুত। পদ্ম শিবির এখনও তেমনভাবে সংগঠন তৈরি করতে সক্ষম হয়নি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে। এখন দেখার সামবার ভোটপ্রক্রিয়া কতটা শান্তিপূর্ণভাবে সংঘটিত হয়। বুথগুলোতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও তার বাইরের অশান্তি সামলাবে কে? এটাই বড় প্রশ্ন। বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে শান্তিতে পৌঁছনো নিয়ে একটা শঙ্কা রয়ে গিয়েছে ভোটারদের।