রাজীব গান্ধীর প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় গান্ধী পরিবারের সদস্যরা নাকি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে করে ছুটি কাটাতে যেতেন! ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের আগে প্রকাশ্য জনসভায় এমনটাই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, বায়ুসেনার বিমানকে প্রধানমন্ত্রী "ব্যক্তিগত ট্যাক্সি" হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
বুধবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে রাজধানীর সাত বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, রাজীব তাঁর মৃত্যুর সময় 'ভ্রষ্টাচারী নাম্বার ওয়ান' হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় গান্ধী পরিবারের সদস্যরা 'আইএনএস বিরাট' যুদ্ধজাহাজে করে একটি দ্বীপে ছুটি কাটাতে যেতেন। সেই দ্বীপের নাম তৎকালীন সরকার গোপন রেখেছিল। কংগ্রেস তথা রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "সাম্রাজ্যের উত্তরসূরীরা তাঁদের পূর্বপুরুষের নামে ভোট চাইছেন। কিন্তু ওই পূর্বজদের যাবতীয় তথ্য নজরদারির আওতায় আনা হবে। যে পূর্বপুরুষদের নামে ভোট ভিক্ষা করছেন, তাঁদের কৃতকর্মের দায় উত্তরসূরীদের নিতে হবে।" ১৯৮৪ সালের দিল্লির শিখ-বিরোধী দাঙ্গার জন্যেও কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করেন মোদী।
দিল্লির সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন, যুদ্ধজাহাজে চড়ে যাঁরা ছুটি কাটাতে যেতেন, তাঁদের মধ্যে রাজীব গান্ধীর শ্বশুরবাড়ির কয়েকজন আত্মীয় থাকতেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ইতালির বাসিন্দা। আইএনএস বিরাটে ১০ দিনের ছুটি কাটানোর সময় ওই অতিথিদের যাবতীয় দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করত কেন্দ্রীয় সরকার এবং ভারতীয় নৌসেনা। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজীবের প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় গান্ধী পরিবার সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে ব্যবহার করত।
রামলীলা ময়দানে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে মোদী বলেন, "আপনারা কি কখনও শুনেছেন, একটি পরিবার যুদ্ধজাহাজে করে ছুটি কাটাতে যায়? আমাদের দেশে এক সময় এমনটাই হয়েছে। কংগ্রেসের সবচেয়ে নামজাদা পরিবারের সদস্যরা দেশের গর্ব আইএনএস বিরাটকে নিজেদের ব্যক্তিগত ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করতেন।" প্রধানমন্ত্রীর এহেন অভিযোগে সহর্ষ সমর্থন জোগায় উপস্থিত জনতা। মঞ্চে তখন উপস্থিত দিল্লির বিজেপি প্রার্থীরা।
কংগ্রেসের পাশাপাশি এদিন আম আদমি পার্টি (আপ) এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে একবারও আপ বা কেজরিওয়ালের নাম নেন নি তিনি। মোদীর অভিযোগ, দিল্লিতে "অকর্মণ্যতার সংস্কৃতি" তৈরি হয়েছে। আপের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "তারা কোটি কোটি বেকারের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। দেশ বদলাতে এসে নিজেরাই বদলে গিয়েছে। এখন তাদের নাম নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার সঙ্গে সমার্থক।"