Advertisment

West Bengal Lok Sabha 2019: 'পাহাড়ে প্রচার করতে সাহস পাচ্ছেন না কেউ'

দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ জানাতে মরিয়া হরকা বাহাদুর ছেত্রীর নেতৃত্বাধীন জন আন্দোলন পার্টি। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে সামনে রেখেই যারা নেমেছে ভোটের লড়াইতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
West Bengal Lok Sabha Elections 2019: দিনহাটায় মোদীকে কড়া জবাব মমতার

নিজের অফিসে হরকা বাহাদুর ছেত্রী। ছবি: শশী ঘোষ

দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ জানাতে মরিয়া হরকা বাহাদুর ছেত্রীর নেতৃত্বাধীন জন আন্দোলন পার্টি (জাপ)। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে সামনে রেখেই জাপ নেমেছে ভোটের লড়াইতে। এই মুহূর্তে পাহাড়ের রাজনীতিতে টিকে থাকতে গেলে হরকাবাহাদুর ছেত্রীর প্রার্থী হওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। একদিকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (গজমুমু) নেতা তৃণমূল প্রার্থী, আর বিজেপির প্রার্থী দার্জিলিংয়ের বাইরের। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক। আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উভয়েই উত্তরবঙ্গ মুখী, এই প্রেক্ষিতে কালিম্পংয়ে জাপ-এর দলীয় কার্যালয়ে বসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বললেন পাহাড়ের এই নেতা।

Advertisment

বিজেপি ও তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে কী বলছেন হরকা বাহাদুর?

দার্জিলিংয়ে কেউ অন্য় দলের হয়ে লড়ছেন, কেউ বাইরে থেকে এখানে এসে লড়ছেন। কিন্তু ভোটাররা তো এখানকারই। ভোটাররা তো ভালভাবেই চেনেন সব দলকে। তাঁরা এও ভালভাবেই জানেন, ২০১৭ সালে কী হয়েছিল। কে কে সেই ঘটনার জন্য দায়ী ছিল। কী ধরনের সাপ্রেশন হয়েছিল। এটা তো সবারই জানা রয়েছে। তার ভিত্তিতে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেবেন। কে তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। কে তাঁদের এক্সপ্লয়েট করেছেন। কাকে বিশ্বাস করলে তাঁদের আকাঙ্খা মিটবে।

আরও পড়ুন: দার্জিলিংয়ে বইছে গণ ক্ষোভের চোরাস্রোত

west bengal darjeeling lok sabha polls 2019 কালিম্পংয়ে জাপ সমর্থকরা। ছবি: শশী ঘোষ

২০১৭ সালের কথা কেন বলছেন?

২০১৭ সালে একটা অরাজক পরিস্থিতি হয়েছিল। ওই ঘটনা মানুষ ভোলেন নি। সেটাই বলতে চাইছি। সেই ঘটনায় ১৩ জন মারা গিয়েছিলেন। যাঁরা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা দায়ী। প্রশাসনও দায়ী। বহু নিরপরাধ লোককে ধরপাকড় করা হয়েছে। তা মানুষ ভোলেন নি। ১৮ এপ্রিল সেই সব ঘটনার জবাব দেবেন পাহাড়ের মানুষ।

পাহাড়ের রাজনীতির হাল কী?

এখানে ভয় দেখিয়ে রাজনীতি চলছে। সাধারণ মানুষ সহ্য় করবেন কত দিন? এখনও ধরপাকড় বন্ধ করেনি।

পাহাড়ের ভোট নিয়ে সমতলে বা কলকাতায় উত্তেজনা রয়েছে। পাহাড়ে ছিটেফোঁটা প্রচার নেই কেন?

আসল পরিস্থিতি এটাই বলে দিচ্ছে। কেউ সাহস পাচ্ছেন না প্রচার করতে। এখানে এসে মানুষের পাশে গিয়ে বলতে পারছেন না, "আমাকে ভোট দাও"। কেউ ভোটারদের ফেস করতে পারছেন না। কী বলে ভোট চাইতে আসবেন?

west bengal lok sabha polls 2019 নির্বাচনী প্রচার নেই পাহাড়ে। ছবি: শশী ঘোষ

পাহাড়ে আন্ডারকারেন্ট রয়েছে?

আমরা সবাইকে আবদেন করছি। আর যখন আন্দোলনে ভুল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে তার বিরোধিতা করেছি। গজমুমু বনধ ডাকলেও রাস্তায় নেমে তার প্রতিবাদে সরব হয়েছি। গ্রেফতার করেছে। তখনও আমরা 'আই ওয়ান্ট গোর্খাল্য়ান্ড' দাবি করেছি।

আরও পড়ুন: ভোট নয়, ‘হোম মেড টি’ সঙ্গী করে লড়াই চা শ্রমিকদের

ভোটাররা কী ভাবছেন?

আমাদের দাবি সাংবিধানিক। সেটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলব, সরকারের সামনে বলব। পুলিশের সামনে বলব। কোথাও সেটাকে চেপে বলব না। কিন্তু কেউ ভুল করলে তার বিরোধিতা করব, তা মানুষ বুঝে গিয়েছেন। তাঁদের হাতেই সবকিছু। এখন আন্দাজ করার মত পরিস্থিতি নেই। যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁরাও বলতে পারবেন না কাকে ভোট দিচ্ছেন। বলবেনও না। তৃণমূলের ফ্ল্য়াগ নিয়ে গেলেও তৃণমূলকে ভোট দেবেন না। বিজেপির ফ্ল্য়াগ হাতে থাকলেও পদ্মচিহ্নে ভোট দেবেন না।

গোর্খাল্য়ান্ডই কি ইস্য়ু?

সব কিছুই প্রধান এখানে। ১১০ বছরে যারা গোর্খাল্য়ান্ড নিয়ে কথা বলেছেন, তাঁরা অনেক কিছুই বলেন নি। তবে গোর্খাল্য়ান্ডের সঙ্গে আরও কিছু চাই। রাস্তা চাই, জল চাই, কাজ চাই, শিক্ষা চাই, সঙ্গে চাই পৃথক রাজ্য়ও। এসব সংবিধানের ভিতরে আছে। সেটা চাইব না কেন? চাওয়াতে কিসের ভয়, কেনই বা ভয়?

চা বাগান নিয়ে কী ভাবছেন?

রাজ্য় ও কেন্দ্র, কেউই তেমন কিছু করেনি। চা শ্রমিকদের হাল খুব খারাপ। তার ওপর বন্ধ চা বাগান, শ্রমিকেদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছে না। আমরা তাঁদের পাশে থাকব।

সাক্ষাৎকারের শেষে হরকাবাহাদুর বলেই ফেললেন, "পাহাড়ের ভবিষ্য়ৎ রক্ষা করতে হলে আমাকে ভোট দিন। এটাই আমার আবেদন।"

Advertisment