অমিত শাহের পর কার হাতে দলের ক্ষমতা?

মনে করা হচ্ছে, অমিত শাহের হাতে আসতে পারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব। এমতাবস্থায় কে হবেন মোদীর 'সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড', সেই নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে চলছে জোর জল্পনা।

মনে করা হচ্ছে, অমিত শাহের হাতে আসতে পারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব। এমতাবস্থায় কে হবেন মোদীর 'সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড', সেই নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে চলছে জোর জল্পনা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
অমিত শাহ ( এক্সপ্রেস ফাইল চিত্র)

অমিত শাহ ( এক্সপ্রেস ফাইল চিত্র)

ভারতীয় জনতা পার্টির বিপুল জয়ের নেপথ্যের কারিগর তিনি, তাঁর 'মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট'-এ সারা দেশ থেকে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসনে জয়লাভ করছে, উত্তরপ্রদেশ, বাংলাতেও সাফল্যের পিছনে তাঁর 'চাণক্য নীতি'কেই সামনে রাখছে রাজনৈতিক মহল। এখন মনে করা হচ্ছে, অমিত শাহের হাতে আসতে পারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব। এমতাবস্থায় কে হবেন মোদীর 'সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড', সেই নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে চলছে জোর জল্পনা।

Advertisment

অন্যদিকে, শুক্রবার মন্ত্রীসভার পদত্যাগ প্রস্তাব পাস হওয়ার পর বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের পদ ঘিরেও দলের অন্দরে থাকছে জিজ্ঞাসার মেঘ, যেহেতু বর্তমানে সংসদের সদস্য নন তিনি, এবং নির্বাচনের আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার তিনি লড়বেন না।

বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা অবশ্য বলেছেন, কী হতে পারে অমিত শাহের ভবিষ্যৎ, তা নিয়ে মোদী কিংবা শাহ কেউই কিছু জানান নি। তবে বিজেপির তিনজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, মন্ত্রীসভায় আসতে পারেন অমিত শাহ, কারণ দলের প্রধান হয়ে তিনি যে কাজ করেছেন তার "পুরস্কার স্বরূপ" তাঁকে মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, যদি তিনি মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের সবচেয়ে 'অভিজাত দপ্তর', অর্থাৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বভার যেতে পারে তাঁর হাতে।

Advertisment

বিজেপির সদর দপ্তরে যাওয়ার মতে অমিত শাহ ( ফটো- প্রভীন খান্না) বিজেপির সদর দপ্তরে যাওয়ার পথে অমিত শাহ। ছবি: প্রভীন খান্না, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

বিপরীতে, বিজেপি এবং আরএসএসের সম্পর্ক নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। আরএসএসের সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির একটা মতপার্থক্য ছিলই, সেক্ষেত্রে বর্তমানে যাঁরা বিজেপিকে নেতৃত্ব দিয়ে এই বৃহৎ জয়ের পথে নিয়ে এসেছেন, তাঁরা যে সঙ্ঘের নির্দেশিকা মেনে কাজ করবেন না, তা বলাই বাহুল্য। এই প্রসঙ্গে বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, "মতপার্থক্য থাকলেও বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আরএসএস নেতৃত্বের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেবেন, এটা দলের রীতি। মত নেবেন কিনা তা দল বিচার করবে।"

আরও পড়ুন: আজ দিল্লিতে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব, মন্ত্রী হচ্ছেন কারা?

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা রাজনাথ সিং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় যোগ দেওয়ার পর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পদে আসীন হন অমিত শাহ, এবং ২০১৬ সালে পুনরায় সার্বজনীনভাবে বিজেপির সভাপতি পদে ক্ষমতায় আসেন শাহ। সভাপতি পদের তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় এ বছরের জানুয়ারী মাসেই, কিন্তু দলের তরফ থেকে তাঁকে আবেদন জানানো হয়, নির্বাচন চলাকালীন তিনি যেন তাঁর পদের দায়িত্বভার থেকে সরে না আসেন। যদিও এখনও পর্যন্ত জানা যায় নি বিজেপিতে এই পদের দায়িত্ব কে পেতে চলেছেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, নরেন্দ্র মোদীর পাশে থেকে তাঁর কাজের ধরন বুঝে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা যাঁর আছে, তাঁকেই দেওয়া হতে পারে এই পদ। রাজনৈতিক মহলের মত, অমিত শাহ তাঁর কর্মদক্ষতা, পরিচালনা, চাণক্যনীতি দিয়ে সর্বভারতীয় এই পদে আসীন থেকে দলকে যে উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন, সেই পদে কে আসতে পারেন তার অপেক্ষায় সকলে। তাঁর বুদ্ধিতেই বাজিমাত বাংলা সহ ভারতের অন্যান্য আসনে। যদিও কর্ণাটক বাদে দক্ষিণ ভারতের আর কোনও রাজ্যে হুল ফোটাতে পারে নি অমিত শাহের তীক্ষ্ণ বাণ।

আরও পড়ুন: ভোটের ডিউটি দিলেন যাঁরা, পার্থক্য গড়লেন তাঁরাই?

নির্বাচনে বিপুল আসনে জয়লাভের পর নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ উভয়েই বর্ষীয়ান নেতা এল কে আদবানি এবং মুরলী মনোহর যোশীর বাড়িতে যান আশীর্বাদ নিতে। আলোচনার পর সংবাদ সংস্থাকে যোশী বলেন, "এটা আমাদের দলের একটা ঐতিহ্য যে আগামি দিনে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য দলের বর্ষীয়ান নেতাদের থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয় । দুজনেই খুবই ভালো কাজ করেছে এবং ঐতিহাসিক জয় লাভ করেছে।" উল্লেখ্য, এবছর আদবানি গড় গান্ধীনগর থেকে অমিত শাহ ৫ লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন।

এই মুহুর্তে সর্বভারতীয় সভাপতি পদে যাঁর নাম দলের অন্দরে সবচেয়ে বেশি চর্চিত, তিনি স্মৃতি ইরানি। ১৫ বছর পর কংগ্রেস দুর্গ আমেঠিতে রাহুল গান্ধীকে পরাস্ত করে এই মুহুর্তে দলের অন্যতম মুখ স্মৃতি, এবং তাঁর এই জয়কে ১৯৭৭ সালের রাজ নারায়ণের জেতার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে, যিনি ইমারজেন্সি বা জরুরি অবস্থা পরবর্তী নির্বাচনে আমেঠি থেকে ইন্দিরা গান্ধীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেছিলেন।

Read the full story in English

bjp amit shah