বিহারে ভোটের মুখে এনডিএ শিবিরে দ্বন্দ্ব প্রকট। এলজেপি জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই বিজেপির পাঁচ বিদ্রোহী নেতা চিরাগ পাসওয়ানের দলে যোগ দিয়েছেন। নীতীশ কুমারকে নেতা চয়নের পরই বিজেপির মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। যার ফল হল দলত্যাগের হিড়িক পড়ে যাওয়া। এই প্রসঙ্গে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সাক্ষাৎকারে বিদ্রোহী নেতাদের চরম হুঁশিয়ারি দিলেন বিহার বিজেপির সভাপতি সঞ্জয় জয়সোয়াল।
এনডিএ শিবিরে ভাঙন বিহার ভোটে কতটা প্রভাব ফেলবে?
ভাঙন ধরেনি। এনডিএ জোটের নেতা নীতীশ কুমার। আর যিনি তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মানবেন তিনিই এনডিএ জোটে থাকবেন। যাঁরা মানবেন তাঁরা থাকবেন না।
কিন্তু এলজেপি কেন্দ্রে এনডিএ জোটের শরিক?
সেটা কোনও বিষয় নয়। রামবিলাস পাসওয়ান সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় ছিলেন না। তিনি যদি সুস্থ থাকতেন, তাহলে পরিস্থিতি অন্য হত। দুর্ভাগ্যবশত, যাঁরা এখন এলজেপিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা ভুল পথে চলছেন। আমরা সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু তাঁরা বাস্তববাদী নন।
এমন অভিযোগ উঠছে, বিজেপিই বিদ্রোহীদের উসকে দিচ্ছে জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে?
এমন রাজনীতি আমরা করি না। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের বোঝানোর চেষ্টা করব। ১২ অক্টোবর বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত যদি তাঁরা দলে না ফেরেন তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওঁরা দলের সদস্য, কোনও ভুল বার্তা যাক এটা চাই না আমরা।
এটা কি সত্যি যে আসন বণ্টন নিয়ে নীতীশ হতাশ ছিলেন এবং সাংবাদিক সম্মেলনে আসতে চাননি?
একেবারেই নয়। আমাদের সম্পর্ক অটুট। শুধু তাই নয়, আসন বণ্টন নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছিল। তখন জেডিইউয়ের তরফ থেকে দুজন প্রার্থীকে বিজেপির ভেবে রাখা আসনের জন্য বাছা হয় আবার আমাদের দুজন প্রার্থীকে ওদের আসনে প্রার্থী করা হয়।
কিন্তু বিজেপির বিক্ষুব্ধদের এলজেপিতে যোগদান নিয়ে জেডিইউ বিরক্ত মনে হচ্ছে?
কাইমুরের জেডিইউ জেলা সভাপতি এলজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি বিজেপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। এমন ঘটনাও হয়েছে। যাই হোক, মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলজেপি বলছে এই নীতীশ ২০০০ বা ২০০৫ সালের নীতীশ কুমার নন, তাও বিজেপি কেন তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করছে?
যেভাবে ২০০৫ থেকে নীতীশ কুমার সরকার চালিয়েছেন তা এককথায় অসাধারণ। আমরা ২০০-র বেশি সিটে জিতব।
শরিকদের মধ্যে ইস্যুতে দ্বন্দ্ব তাহলে বিজেপি ও জোটসঙ্গীরা কীভাবে নিচুতলার কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখবে?
কোনও সমস্যাই হবে না। আমাদের প্রত্যেক জেলায় সমন্বয় কমিটি আছে। চারটি দল- বিজেপি, জেডিইউ, হাম, বিকাশসীল ইনসান পার্টি একসঙ্গে লড়াই করবে। আমাদের সম্পর্ক অটুট। একে অপরকে ভাল করে জানি।
এলজেপিকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে প্রচার করতে দেবেন?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের তারকা প্রচারক। আমাদের তালিকায় এক নম্বর। তাহলে অন্য কোনও দল কীভাবে তাঁকে প্রচারে ব্যবহার করতে পারে? এটা করলে আমরা নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে বলব।
হাথরাসের ঘটনা বিহার ভোটে প্রভাব ফেলবে?
যা হয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। উত্তরপ্রদেশ সরকার কড়া পদক্ষেপ করেছে। বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন হয়েছে।
কোভিড, পরিযায়ী শ্রমিক, বন্যা-সহ একাধিক সমস্যা রাজ্যে, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাও একটা বড় ইস্যু, বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটা?
মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে তারা কীরকম সরকার চান। তাঁরা মহাজোটের সরকার দেখেছে ১৯৯০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত। তাঁরা এনডিএ সরকারও দেখেছে। তাঁরা যেটা চান সেটা বেছে নেবেন। যা তাঁদের সিদ্ধান্ত হবে আমরা মেনে নেব। গত আট মাসে মানুষ দেখেছে সরকার কীভাবে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন