দুই দফায় রাজ্যের মাত্র ৫টি কেন্দ্রে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোট হয়েছে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও রায়গঞ্জে। এখনও বাকি রয়েছে এ রাজ্যের ৩৭টি লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। এমতাবস্থায় মুকুল রায় দাবি করেছেন, নির্বাচনের ফলাফল ৫-০। মনে করা হচ্ছে, বিজেপি কর্মীদের চাঙ্গা রাখতেই আগের মতো কৌশল নিয়েছে গেরুয়া নেতৃত্ব। সামগ্রিকভাবে বিষয়টিকে মমতার ৪২-এ ৪২ -এর পাল্টা কৌশল হিসাবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
কোচবিহারে নির্বাচনের পর বিকেল থেকে অবস্থান-ধর্নায় বসেছিলেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। পরের দিন কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। তাঁদের দাবি ছিল, রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করানো যাবে না। তবে রাজ্যে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে তুলনামূলক অশান্তি কম হয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য় দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল বলেন, প্রথম পর্যায়ের থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে অশান্তি কম হয়েছে। তবে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছি, পরবর্তী পর্যায়ে প্রতিটি কেন্দ্রে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
আরও পড়ুন- ‘সুন্দর চেহারা দেখে কেউ ভোট দেবে না’, সন্ধ্যা-মুনমুনকে কটাক্ষ দিলীপের
মনে করা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়ের 'ডান হাত' মুকুল রায় একই কায়দায় চাপ বাড়াতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর। ২১ জুলাই ধর্মতলার শহিদ মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁদের লক্ষ্য ৪২-এ ৪২। এখনও প্রতিটি জনসভায় সেই লক্ষ্যমাত্রাই আওড়ে যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তৃণমূল এ রাজ্যে জয়ের ব্যাপারে যে কতটা নিশ্চিত তা বোঝাতেই মমতার এমন 'টার্গেট'। এদিকে, প্রথম পর্যায়ে দুই কেন্দ্রে ভোটের পর মুকুল রায় হাসি মুখে দাবি করেছিলেন, বিজেপি ২-তৃণমূল ০। যদিও সেদিন তিনশোর ওপর বুথে পুনরায় নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছিল বিজেপি। এদিন ভোটপর্বের শেষলগ্নে মুকুল রায় বলেন, প্রথাম পর্য়ায়ের দুটি কেন্দ্রে জিতে গিয়েছি। এবার তিন কেন্দ্রে ভোটের পর ফল হল, বিজেপি ৫, তৃণমূল ০। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তৃণমূল নেত্রীর দেখানো পথেই তাঁর ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন একদা বিশ্বস্ত সৈনিক মুকুল রায়। তৃণমূলের উপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি, মুকুলের এই 'প্রত্যয়' গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের চাঙ্গা রাখার টনিক হিসাবেও কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার তিন কেন্দ্রের কিছু বুথে গন্ডগোল হয়েছে। বিশেষ করে রাজ্য পুলিশ যেসব বুথে মোতায়েন ছিল, সে সব জায়গায় ভোট দিতে অস্বীকার করে মানুষ। বিজেপি এদিন দাবি জানিয়েছে, পরবর্তীতে প্রতি কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তাঁর অভিযোগ, বাংলায় লোকতন্ত্র নেই। মুখ্যমন্ত্রী লোকতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। পুলিশই এখন তাদের ক্য়াডার। বাংলায় একটা জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। মুকুলের দাবি, পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে ব্যবস্থা নেওয়ায় ৮০ শতাংশ বুথে আধাসেনা মোতায়েন করা সম্ভব হয়েছে। যদি সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায়, তাহলেই কেবল বাংলায় অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট সম্ভব। এদিন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েকের কাছে সেই দাবিই জানিয়ে এসেছন তাঁরা। পক্ষপাতদুষ্ট অফিসারদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেও বলেছেন মুকুলরা।