বয়ালে ছাপ্পা ভোট ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও বৃহস্পতিবারই সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এবার বিপুল ভোটদানের পরিসংখ্যান তুলে ধরে নন্দীগ্রামে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। প্রসংশায় ভরালেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের কর্মীদের কাজ। যার মাধ্যমে আদতে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে নস্যাৎ করলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
শুক্রবার টুইটে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় লিখেছেন, 'দ্বিতীয় পর্যায়ের যে ৩০টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে সেখানে সার্বিকভাবে ভোট পড়েছে ৮৪ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য যে নন্দীগ্রামে ভোট পড়েছে ৮৮ শতাংশের বেশি। যা অত্যন্ত ইতিবাচক। সিআরপিএফ ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ খুব ভালো কাজ করেছে। বাকি পর্যায়গুলোতেও এই ধারা বজায় থাকবে বলে আশা করছি। গণতন্ত্র রক্ষায় সবাইকে ভোটের আবেদন করছি। হিংসার কোনও স্থান নেই।'
বৃহস্পতিবার ভোট ছিল রাজ্যের চার জেলার ৩০ বিধানসভা কেন্দ্রে। ভোট ঘিরে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ ঘিরে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল বাংলার এই হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে। বেলা বাড়তে অবশ্য বয়ালের মকতব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে যান তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এতেই উত্তেজনা কয়েকগুণ বাড়ে। তাঁকে দেখেই বিজেপি-তৃণমূল কর্মীরা বুথের বাইরে সংঘর্ষে জড়ায়। মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে চলে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিষ্ক্রীয়তায় বিজেপি কর্মীরা ওই এলাকায় ছাপ্পা ভোট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা।
প্রচণ্ড উত্তেজনায় প্রায় ঘন্টা দুয়েক বয়ালের ভোট কেন্দ্রেই বসেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। পরে অবশ্য বাড়ি সুরক্ষা বহিনীর মাধ্যমে তাঁকে বার করে দেওয়া হয়। তার আগে মকতব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বসেই সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ফোন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পর পরই টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধরকড় জানিয়েছিলেন, 'সমস্যার কথা জানিয়েছেন তা আমি নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে সমস্ত আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।' তারপরই শুক্রবার টুইটে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ওড়ালেন রাজ্যপাল।
এদিকে, নন্দীগ্রামে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করা যাচ্ছে না। কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে শুরু করল পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠির বিষয়ে জানায় নির্বাচন কমিশন। ডিজি পূর্ব মেদিনীপুরের এসপিকে বিষয়টি জানান। এরপর পূর্ব মেদিনীপুরের এসপির নির্দেশে নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ নথিভুক্ত করে একটি ডায়েরি করা হয়। তার প্রেক্ষিতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করলো। সেই তদন্ত ইতিমধ্যেই রিপোর্ট কমিশনে জমা পড়েছে।/
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন