সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাঁর আগে বিরোধীদলকে নিশানা করতে মোদীর হাতে নয়া অস্ত্র। আর তাতেই বিরোধীদের কুপোকাৎ করতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী। ভারতের দ্বীপ শ্রীলঙ্কাকে দিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস! ভোটের মুখে বিরাট অভিযোগে ঝড় তুলেছেন মোদী। এবার সেই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের পাশাপাশি ডিএমকে-কেও সরাসরি আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী।
কাচাথিভু নিয়ে যে নতুন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তা ডিএমকে-র দ্বিচারিতা সম্পূর্ণরূপে উন্মোচিত করেছে বলে আক্রমণ শানিয়েছেন মোদী। মোদী এক্স হ্যান্ডেলে উল্লেখ করেছেন, 'একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে, যাতে বলা হয়েছে 'তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধি এই চুক্তির কথা জানতেন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে কাচাথিভুকে শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে দিতে রাজি হয়েছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী মোদী কংগ্রেস এবং ডিএমকেকে আক্রমণ করে বলেছেন 'কংগ্রেস এবং ডিএমকে একটা পারিবারিক ইউনিট। তারা শুধু নিজেদের ছেলে-মেয়েদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে। তারা অন্য কাউকে পরোয়া করে না। কাচাথিভু দ্বীপ নিয়ে তাদের উদাসীনতা আমাদের দরিদ্র জেলে এবং মৎস্যজীবী মহিলাদের স্বার্থকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
শ্রীলঙ্কাকে বোকার মত কাচাথিভু দ্বীপ উপহার দেওয়ার অভিযোগে রবিবারও (৩১ মার্চ) কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ তিনি পোস্ট করেছেন, ‘চোখ খুলছে, আর চমকে উঠতে হচ্ছে। নতুন তথ্যগুলো দেখাচ্ছে যে কীভাবে কংগ্রেস কাচাথিভু দ্বীপকে শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে দিয়েছে। এই কাজ প্রত্যেক ভারতীয়কে ক্ষুব্ধ করেছে। জনগণ আজ ফের নিশ্চিত হয়েছে যে, আমরা কখনও কংগ্রেসকে বিশ্বাস করতে পারি না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'বিবৃতি দেওয়া ছাড়া ডিএমকে তামিলনাড়ুর স্বার্থ রক্ষার জন্য কিছুই করেনি'। প্রকৃতপক্ষে, সম্প্রতি তথ্যের অধিকারের (আরটিআই) অধীনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে কীভাবে ভারতের কাচাথিভু দ্বীপটি ১৯৭৪ সালে কংগ্রেস সরকারের আমলে শ্রীলঙ্কার কাছে হস্তান্তর করে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এই বিষয়ে আরও বলেছেন যে কাচাথিভু নিয়ে প্রকাশিত নতুন তথ্যে ডিএমকে-র দ্বিচারিতাকে সামনে এনেছে। অন্য একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সেই সময়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধি এই চুক্তি সম্পর্কে জানতেন এবং তিনি কাচাথিভুকে শ্রীলঙ্কার কাছে হস্তান্তর করতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সম্মত হন। আরটিআই রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে যে তৎকালীন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধি এই চুক্তি সম্পর্কে জানতেন এবং এতে সম্মত হন'।
মোদী ডিএমকে নিশানা করে বলেন, 'তামিলনাড়ুর স্বার্থ রক্ষার জন্য ডিএমকে কিছুই করেনি' । প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, “কংগ্রেস এবং ডিএমকে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতেই বিশ্বাস করে। তারা কেবল চায় নিজের ছেলে মেয়েরা এগিয়ে যাক। দেশের বাকী আম-আদমির কথা ভাবেন না তারা। কাঁচাথিভুর প্রতি উদাসীনতা দরিদ্র জেলেদের স্বার্থের ক্ষতি করেছে।"
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের আগে তামিলনাড়ুতে বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাই নথিপত্র দেখিয়ে অভিযোগ করেন যে, কংগ্রেস কখনও কাচাথিভুর মত ক্ষুদ্র এবং জনবসতিহীন দ্বীপের গুরুত্ব বুঝতেই পারেনি। এমনকী, সংবাদমাধ্যমের খবরেও বলা হয়েছে যে, ‘জওহরলাল নেহরু একবার ওই দ্বীপের দাবি সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দিতে’ দ্বিধা করবেন না বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই বিতর্ক নতুন কিছু না। ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ভারত, ১৯৭৪ সালে কাচাথিভুর ওপর তার দাবি পরিত্যাগ করেছিল। সেটাকেই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে বিজেপি। কংগ্রেস আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দিকে নজর রেখে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে এখন এই বিষয়টি উত্থাপন করার অভিযোগ করেছে।