General Election 2019: নকুলদানা, শলাকা, পাচন অথবা চড়াম চড়াম- অনুব্রত মণ্ডলের এ যাতীয় মুখ নিঃসৃত বাণীতে ইদানিং অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে বাংলার রাজনীতি। তৃণমূলের এই দাপুটে নেতার সংলাপ বরাবরই চড়িয়ে রাখে বঙ্গ রাজনীতির পারদ। এবার লোকসভা নির্বাচনের বাজারেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। ভোটের বাংলায় অনুব্রতের নকুলদানা দাওয়াই ইতিমধ্যেই হটকেক। কিন্তু সেই 'কেষ্ট'ই এবার ভিন্ন অবতারে। যে অনুব্রত মণ্ডলের (কেষ্ট) বাহুবলী মন্তব্য শুনতেই অভ্যস্ত গ্রাম বাংলা, সেই তিনিই এবার গান্ধীগিরির পথ ধরলেন! সকলকে অবাক করে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বীরভূমের বাজখাঁই গলার 'কেষ্টদা'র উপদেশ, বিরোধীরা এক গালে চড় মারলে, আরেক গাল বাড়িয়ে দিন। দোর্দণ্ডপ্রতাপ অনুব্রতর এমন গান্ধী অবতারে যার পর নাই হতচকিত লাল মাটির দেশ।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে
কী বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল?
তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘ভাল করে নির্বাচন করতে হবে, কোনও ঝুটঝামেলা যেন না হয়। শান্তিপূর্ণভাবে যেন ভোট হয়। ওরা যদি চড় মেরে দেয়, গাল পেতে দেবে। যদি ওরা কেউ ঝামেলা করে, তুমি মার খাবে, তবু মারতে পারবে না।’’
আরও পড়ুন: নকুলদানার পর এবার শলাকা দাওয়াই অনুব্রতর
অনুব্রত মণ্ডলের এমন ভোলবদল দেখে চোখ কপালে উঠেছে বিরোধীদের। তবে রাতারাতি অনুব্রতর এমন পরিবর্তনের পিছনে বিশেষ কৌশল রয়েছে বলেই মনে করছে বীরভূম জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘বাংলার মানুষ আতঙ্কিত। তাঁদের ভোট নেওয়ার জন্যই কৌশল নিয়েছেন, গান্ধীগিরির কথা বলছেন। ভাল মানুষ সাজার বার্তা দিচ্ছেন’’।
আরও পড়ুন: ‘দল পাল্টাতে মমতার জুড়ি নেই’
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোটার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী এমনকি, বিরোধীদের নকুলদানা খাওয়ানোর নিদান দিয়েছিলেন অনুব্রত। এরপর দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমকে ভোট দেবেন না, বিজেপিকে ভোট দেবেন না, কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। ভোটটা আমাদের দেবেন’’। এরপরই চেনা ভঙ্গিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে অনুব্রতর হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা বুথের কর্মী রয়েছেন, তাঁদের বলছি, বুথের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। শলাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। শলাকা দেখিয়ে ভোট করাবেন’’। এছাড়া, অতীতে পাচন দাওয়াই ও চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজানোর কথা বলেও প্রবল বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বীরভূমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। কিন্তু, সেই তিনিই এখন অহিংস পথের যাত্রী! তবে এসব দেখে শুনে এখনও বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে পারছেন না জেলার সাধারণ মানুষ।