General Election 2019: হুড খোলা জিপ। মাইক হাতে নির্বাচনী প্রচার সারছেন মা। মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি। পরনে সাদা জামা, নীল রঙের জিন্স। মায়ের প্রচারে জনতার দরবারে শামিল হয়ে হাত নেড়ে জনসংযোগ করলেন তিনিও। মা এবার ভোটে লড়ছেন, তাছাড়া এবার তাঁর প্রথম ভোট বলেও কথা। তাই পরীক্ষার ফাঁকে সময় বের করে লন্ডন থেকে সোজা চলে এসেছেন রায়গঞ্জে। দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতির পাঠ থেকে ক’দিনের বিরতি নিয়ে ভোটের বাংলায় তাঁর নতুন দায়িত্ব, মায়ের হয়ে প্রচার সারা। মায়ের নাম দীপা দাশমুন্সী। আর তিনি দীপা-পুত্র প্রিয়দীপ দাশমুন্সী। উনিশের ভোটের বাংলায় কিংস কলেজ লন্ডনের পড়ুয়া প্রিয়দীপের এ এক নয়া অভিজ্ঞতা।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে
কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁর একেবারেই ফুরসত নেই। একথা নিজেই জানালেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর পুত্র। প্রিয়দীপ বললেন, ‘‘মায়ের পাশে থাকার জন্য এসেছি। এটা বেশ অন্যরকম অভিজ্ঞতা। বাবা-মা’কে কঠোর পরিশ্রম করতে দেখেছি। এখন আমিও এই অভিজ্ঞতা অর্জন করছি।’’ তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিকে কেরিয়ার হিসেবে বাছা নিয়ে কী ভাবছেন? জবাবে প্রিয়দীপ বললেন, ‘‘আজকের তরুণ প্রজন্ম সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাজনীতি সম্পর্কে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল। কংগ্রেসে অনেক তরুণ মুখ রয়েছে...আগামী কয়েকবছর আমি পড়াশোনা নিয়েই থাকব। তারপর মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।"
সকাল ৮টা থেকে রায়গঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সীর সমর্থনে হুড খোলা জিপে চড়ে প্রচারে বেড়িয়ে পড়ছেন প্রিয়দীপ। শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, রায়গঞ্জে প্রথম ভোটও দেবেন দীপা-পুত্র। ভোট মেটার পর আবার লন্ডনে উড়ে যাবেন প্রিয়দীপ।
আরও পড়ুন: বাংলায় বাড়তি নজর কমিশনের, এবার নিয়োগ বিশেষ পর্যবেক্ষক
ইসলামপুরে দীপার রোড শো-য় ঢুঁ মেরেছিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। রোড শো-য় দীপার গলায় শোনা গিয়েছে রাহুল গান্ধীর ‘ন্যায়’ প্রকল্পের কথা। পাশাপাশি ভেদাভেদের রাজনীতি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুরও চড়িয়েছেন দীপা। মাইক হাতে দীপা যখন জনতার কাছে ভোট চাইছেন, সেসময় মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে প্রিয়দীপও হাত নাড়লেন জনতার উদ্দেশ্যে।
মায়ের সঙ্গে ভোটপ্রচারের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রিয়দীপ আরও বললেন, ‘‘যদিও কংগ্রেস নেতাদের দেখে বড় হয়েছি, আমার নিজেরও বিচারবুদ্ধি রয়েছে। বিজেপি ও আরএসএসের মতাদর্শকে একেবারেই সমর্থন করি না...।’’
রায়গঞ্জে এইমস নির্মাণের দাবি বহুদিন ধরে করে আসছেন দীপা দাশমুন্সীরা। সম্প্রতি রায়গঞ্জে রাহুল গান্ধীর সভাতেও এই দাবি করেছিলেন দীপা এবং স্থানীয় নেতারা। ক্ষমতায় এলে এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। দীপা-পুত্র প্রিয়দীপের মুখেও শোনা গেল এইমস নির্মাণের প্রসঙ্গ। প্রিয়দীপ বললেন, "আমার বাবা রায়গঞ্জে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কলকাতার ভাল হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে যেতে ১৮ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। তখন উনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ভাবুন একবার, একজন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হয়! যদি কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে আর আমার মা জেতে, তাহলে আমরা এখানে এইমস তৈরির চেষ্টা করব।"
প্রসঙ্গত, বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ রায়গঞ্জ কেন্দ্র। ১৯৯৯ ও ২০০৪ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী। ২০০৯ সালে ওই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাঁর স্ত্রী। সেবার জিতলেও, ২০১৪ সালের নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের কাছে হেরে যান দীপা। এবারও ওই কেন্দ্রে দীপা বনাম সেলিমের লড়াই হবে।
Read the full story in English