শুক্রবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক সাক্ষাৎকারে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলেন, রাজধানীতে ১২ মে লোকসভা নির্বাচনের শেষ লগ্নে কংগ্রেসের দিকে চলে যায় 'মুসলিম ভোট'। সেই প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেত্রী তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের প্রতিক্রিয়া, প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার। সংবাদ সংস্থা এএনআই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, "আমি ঠিক জানি না উনি কী বলতে চাইছেন। সবার অধিকার রয়েছে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার। দিল্লির মানুষ তাঁর সরকারের মডেল বোঝেনও নি, পছন্দও করেন নি।"
শুক্রবারের সাক্ষাৎকারে কেজরিওয়ালের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ১২ মে অনুষ্ঠিত দিল্লির সাতটি কেন্দ্রের নির্বাচনে ক'টিতে জয়ের আশা করছেন তিনি। তাঁর উত্তর ছিল, "দেখা যাক কী হয়। আসলে ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত মনে হচ্ছিল সাতে সাত পাবে আম আদমি পার্টি। শেষ মুহূর্তে সমস্ত মুসলিম ভোট শিফট হয়ে যায় কংগ্রেসের দিকে। ভোটের আগের রাতে। আমরা বোঝার চেষ্টা করছি কী হলো। কেন মুসলিম ভোট সম্পূর্ণভাবে কংগ্রেসের দিকে চলে গেল। মোট ভোটসংখ্যার প্রায় ১২-১৩ শতাংশ।"
পাঞ্জাবের রাজপুরায় প্রচারে গিয়ে এই সাক্ষাৎকার দেন কেজরিওয়াল। আগামীকাল ১৯ মে পাঞ্জাবের ১৩টি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন হবে। সবকটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আম আদমি পার্টি।
আরও পড়ুন: মোদীর প্রথম সাংবাদিক বৈঠক ‘নজিরবিহীন’, কটাক্ষ রাহুলের
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পাঞ্জাব থেকে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি আম আদমি পার্টি। পাঞ্জাবে প্রচারে এসে সেই প্রসঙ্গে আইআইটি খড়গপুরের এই প্রাক্তনী অনেকটা ক্ষোভ উগরে বলেন, "আমি খলিস্তানের কম্যান্ডো ফোর্সের গুরিন্দর সিংয়ের বাড়িতে ছিলাম, সেই সময় বিরোধী পক্ষ রটিয়ে বেড়িয়েছিল যে কেজরিওয়াল জঙ্গিদের সাথে হাত মিলিয়েছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আমি যদি সন্ত্রাসবাদী হতাম তাহলে বাচ্চাদের জন্য স্কুল না বানিয়ে তাদের হাতে বন্দুক-বোমা তুলে দিতাম না?"
এদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মতো আপ প্রধানের গলাতেও ছিল নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে একরাশ ক্ষোভ । কমিশনকে তোপ দেগে কেজরিওয়াল বলেন, "গত ১০ দিন ধরে এরা অপকর্ম করে যাচ্ছে। বাজারে প্রচুর টাকাও ছড়ানো হচ্ছে। আমি সকলকে ফোন করে জানিয়েছিলাম যে যা টাকা দিচ্ছে নিয়ে নিন কিন্তু ভোটটা আম আদমি পার্টিকে দিন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে কমিশন অদ্ভুত আচরণ করছে। আমাকে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠায় তারা, যেখানে বলা হয়েছে, আমি যদি এসব কথা বলি তাহলে তারা আমার পার্টিকে নির্বাচন থেকেই বাতিল করে দেবে। আমি এতদিন চুপ করে ছিলাম, কিন্তু এখন আমাকে বলতেই হবে।"
দিল্লি এবং পাঞ্জাবের কয়েকজন বিধায়কদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"কয়েকজন দুর্বল ছিলেন, তাঁরা ভেঙ্গে পড়েছেন। কয়েকজন টাকার জন্য, দলীয় ক্ষমতার লোভে বিধায়ক পদের জন্য লড়াই করেছিলেন এবং কয়েকজনকে জোর করা হয়েছিল পার্টি ছেড়ে দিতে। ভগবান এর বিচার করবেন। সম্প্রতি, আমার দলের সাতজন বিধায়ককে বিজেপির পক্ষ থেকে ১০কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।"
Read the full story in English