নাম না করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে আসানসোলের সভায় তীব্র কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন আসানসোলে এক জনসভায় মোদী বলেন, "কয়েকটি আসনে লড়াই করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দিদি! প্রধানমন্ত্রীর পদ নিলামে পাওয়া গেলে লুটে নেওয়া জিনিস নিয়ে হাজির হয়ে যেত তৃণমূল আর কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর পদ নিলামে মেলে না। তাহলে ওই পদ সারদা-নারদের টাকায় কেনা হয়ে যেত।কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে সাধারন মানুষের ভোটে জিতে আসতে হয়। ১৩০ কোটি দেশবাসীর আশীর্বাদে ওই পদ পাওয়া যায়।"
এই লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে অংশ নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের দুই চলচ্চিত্র অভিনেতাকে ভারত থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই প্রসঙ্গও আসানসোলের জনসভায় তুলেছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্য, "এখন আর তৃণমূল কংগ্রেসের সমাবেশে সাধারণ মানুষ আসছেন না। বিদেশ থেকে চলচ্চিত্র শিল্পী নিয়ে আসতে হচ্ছে।" মোদীর অভিযোগ, "অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে দল করছেন দিদি। এসব চলবে না।"
এদিনও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর অবস্থান নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময় পাকিস্তানের চোখের জল পড়েছিল।পাকিস্তানে কত জঙ্গী মারা গিয়েছে তার প্রমাণ চাইছেন? এবার তো জঙ্গী হওয়ার প্রমাণ চাইবেন! অন্যদিকে গরীবের রোজগারের টাকা লুটের ষড়যন্ত্র করছেন।" মোদী কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদু্ল্লা এবং ওমর আবদুল্লাকেও। মোদীর বক্তব্য, "কলকাতার সভায় জম্মু-কাশ্মীরের বাপ-বেটা এসেছিলেন। তাঁরা বলছেন, জম্মু-কাশ্মীরে আলাদা প্রধানমন্ত্রী চাই। ভারতবর্ষে দুজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন? সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে দিদিকে।"
বাংলার প্রশাসনিক কার্যকলাপেরও তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়েও ফের সরব হন মোদী। তিনি বলেন, "তৃণমূলের রাজত্বে বাংলায় লাগামহীন দুর্নীতি ও আপরাধ চলছে। স্পিডব্রেকার দিদি তো আছেনই। এখন এসব আর গোপন নেই। নারদা, সারদা, রোজ ভ্যালি। গরীবের টাকা আত্মসাৎ করে অপরাধ করা হয়েছে। একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গরীবের লুটের পক্ষে দাঁড়িয়ে যান!"
পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন নিয়েও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তৃণমূল কংগ্রেস দেশের হাল ধরতে রাজ্যে ৪২ টি লোকসভা আসনেই জয় চাইছে। তাহলে দিল্লিতে দরবার করা সহজ হবে। মোদী বলেন, "দিদি বলে বেড়াচ্ছেন দেশকে তৃণমূলের মত উন্নয়ন মডেল দেবেন। স্পিডব্রেকার দিদির মডেল কী? কোল মাফিয়া, বালি মাফিয়া, আর জমি মাফিয়ার মডেল। লুটের ভাগ দাও। যুবকদের জন্যও মডেল আছে। চাকরি থাকলে বেতন নেই, বেতন থাকলে ইনক্রিমেন্ট হয় না। টাকা বাড়লেও ডিএ মেলে না। এই দিদিওয়ালা মডেল চাই?" প্রশ্ন তোলেন মোদী।