General election 2019: লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বেও রাজ্যে বহাল রইল টানটান উত্তেজনা। আবারও তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতে উত্তেজনা ছড়াল খাস কলকাতায়। বৃহস্পতিবার রাতে দমদমের নাগেরবাজারে বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্যের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা নয়া মোড় নিয়েছে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আনা অভিযোগে।
চাঞ্চল্য উদ্ধারকৃত একটি খামকে ঘিরে। তৃণমূলের অভিযোগ, গণ্ডগোলের সময় মুকুল রায়ের গাড়ি থেকে খামটি উদ্ধার হয়। খামের উপর কামারহাটির সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়ের নাম লেখা ছিল। কীভাবে ভোটে বিজেপি "বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিচ্ছে", তার হিসেব খামের মধ্যে রয়েছে বলে দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি আরও দাবি করেন, কাদের নামে নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট দায়ের করা হবে এবং আটকে রেখে চালানো হবে নির্বাচন প্রক্রিয়া, তারও নীলনক্সা পাওয়া গেছে খামে। নির্বাচন কমিশন এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই মর্মে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মুকুল রায়-শমীক ভট্টাচার্যের গাড়ি ‘ভাঙচুর’, ধৃত ১০
জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "নাগেরবাজার নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে, খামটি আমার কাছে আসে। যেখানে টাকার ডিল হয়েছে, তিন লক্ষ নব্বই হাজার টাকা আপাতত কামারহাটির সিপিএমের প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছে। দমদম এবং কামারহাটিতে কাদের গ্রেপ্তার করা হবে তাদের নামের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে।"
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর তাঁকে 'চ্যালেঞ্জ' ছুড়ে দিয়েছেন কামারহাটির প্রার্থী মানস মুখোপাধ্যায়। ঘটনার কথা অস্বীকার মানসবাবুর বক্তব্য, "খামের কথা যেটা উঠেছে, সেটা নতুন কিছু নয়। আমি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি যে এরা নির্বাচনের দিন ভোট লুঠ করে।" তৃণমূলকে নিশানা করে সিপিএম প্রার্থী আরও বলেন, "ওরা মনে করে সবই ক্রয়যোগ্য। ক্রয় করে ভোটেও জেতা যায়, ক্রয় করে এমএলএ-ও কেনা যায়। কুৎসা প্রচার করে যাচ্ছে। কমিশনের কাছে মিথ্যা কথা বলার জন্য আমি অভিযোগ করব। জ্যোতিপ্রিয়কে চ্যালেঞ্জ দিলাম, প্রমাণ করে দেখাক যে আমি ওখানে ছিলাম, না পারলে জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে আমি মানহানির মামলা করব।"
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন এখানে
সূত্র মারফৎ জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে দমদমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার পর নাগেরবাজারে সিপিএম নেতা পল্টু দাশগুপ্তের সঙ্গে একটি বাড়িতে 'গোপন বৈঠকে' বসেন মুকুল রায় ও শমীক ভট্টাচার্য। সে সময়ই কয়েকজন দুষ্কৃতী ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। বাড়ির নীচে থাকা কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। সিপিএম-বিজেপি বৈঠকের অভিযোগ ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলে। যদিও হামলার সময় গাড়িতে ছিলেন না মুকুল ও শমীক। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে বিজেপি। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
এই ঘটনা প্রসঙ্গেই তৃণমূল নেতা তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, "কী করে ভোট ম্যানেজ করা যায় এ নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। টাকার লেনদেন হচ্ছিল। আমার কর্মীরা খবর দিয়েছিলেন। শমীক নিজের গাড়ি নিজেদের লোককে দিয়ে ভাঙিয়েছে, তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। সহানুভূতি আদায়ের জন্য এসব করেছে।"