General Election 2019: কাকা-ভাইপোর মান-অভিমান কি মিটে গেল? অনুব্রত মণ্ডলের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে যেন সেরকম ইঙ্গিতই দিলেন অনুপম হাজরা। শুধু কী তাই, বোলপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে কাকুর কথায় পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজও সারলেন একদা তৃণমূল সাংসদ তথা বর্তমানে যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম। ভাইপো বললেন, ‘‘কাকু অন্যের কথা শুনে ভুল বুঝেছিল’’। কাকুর কথাতেও অবশ্য তেমন অভিমানের আঁচই পাওয়া গেল। অনুপমের 'কেষ্ট কাকু' অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল বললেন, ‘‘ও একটু বোকামো করেছে’’। তবে এতেই শেষ নয়, আগামী দিনে তৃণমূলের সাংসদ হতে চাইলে ভাইপোর সেই আবদার মেটাতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন অনুব্রত। সবমিলিয়ে তৃণমূল-বিজেপি নির্বাচনী উত্তাপের মধ্যে বোলপুরে অনুব্রত-অনুপমের পুনর্মিলন যেন এই দখিনা বাতাস এনে দিল, এমনটাই বলছেন বঙ্গ রাজনীতির একাধিক কুশীলব।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে
আরও পড়ুন: কাকার কাছে ভোটজয়ের ‘টিপস’ চাইলেন ভাইপো, মুচকি হাসি অনুব্রতর
পুনর্মিলন পর্বে কী ঘটল?
এদিন ভোট দেওয়ার পরই বোলপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে যান যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা। এরপর অনুব্রত মণ্ডলের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন অনুপম। ব্যাস, এতেই কাকুর রাগ গলে জল। এরপরই ভাইপোকে সস্নেহে কাকুর প্রশ্ন, ‘‘খাওয়াদাওয়া করেছিস"? ভাইপো উত্তর দেওয়ার আগেই তিনি বলে ওঠেন, "খেয়ে নিস এখানে, কোনও অসুবিধে নেই’’। এরপর কাকুর কথা মতো 'বাধ্য' ভাইপো রাজনৈতিক দূরত্ব দূরে সরিয়ে রেখেই বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারেন।
আরও পড়ুন: ‘নকুলদানা শুকনো, মিহিদানা রসালো’, মিহিদানা বিলি করে বললেন অনুপম
এ প্রসঙ্গে অনুপম হাজরা বলেন, ‘‘রাজনীতি আলাদা, সম্পর্ক আলাদা। দিনের শেষে সবাই মানুষ। যে দলই করি না কেন, সম্পর্ক যেমনই ছিল, তেমনই আছে। এটা সৌজন্যের সাক্ষাৎ। কাকুকে ফোন করেছিলাম। উনি বললেন, ভোট দিতে এলে , একবার আসিস। ভোট দেওয়ার পর ঠিক করেছিলাম, কাকুর সঙ্গে দেখা করব।’’ এরপরই অনুব্রতের উদ্দেশে অনুপমের খোঁচা, ‘‘চেষ্টা করব যাতে কাকুকে মিহিদানা খাওয়াতে পারি।’’ প্রসঙ্গত, অনুব্রতর নকুলদানা দাওয়াইয়ের পাল্টা অনুপম মিহিদানা খাওয়ানোর কথা বলেছিলেন। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ এও বলেছিলেন যে, নকুলদানা শুষ্কং কাষ্ঠং, মিহিদানা অনেক নরম ও সুস্বাদু।
ভাইপোকে নিয়ে কাকু অনুব্রত বললেন, ‘‘ও একটু বোকামো করেছে।’’ সঙ্গে সঙ্গে পাশ থেকে অনুপম বললেন, ‘‘কাকু অন্যের কথা শুনে ভুল বুঝেছে। আমরা আসলে আবেগের বশে অনেক কিছু করে ফেলি।’’ অনুপমের কথা শেষ হতেই অনুব্রত বললেন, ‘‘আমাদের গভীর যোগাযোগ রয়েছে। সে যত অভিমানই হোক না কেন। ও তৃণমূল ছেড়েছে। আমার এলাকার ছেলে। ও আবার সাংসদ হতে চাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলব। রাজ্যসভা তো রয়েইছে।’’ তবে কি, আবারও অনুপম দল বদলাবেন? অনুব্রতর কথায় এ জল্পনাই চলছে বাংলার রাজনীতির অলিন্দে।
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই ফেসবুক পোস্টে অনুপম লেখেন, ‘‘কারওর মা প্রয়াত হলে তাঁকে দেখতে যাওয়াটা সৌজন্যবোধের মধ্যে পড়ে। রাজনীতির সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক আলাদা।’’ প্রসঙ্গত, ক’দিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মা।