General Election 2019: চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনের দিন কাকা-ভাইপোর রসায়ন দেখে নাকি বেজায় চটেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। সোমবার বোলপুরে তৃণমূলের কার্য্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ফুরফুরে মেজাজে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্তমানে বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরাকে। অনুব্রত-অনুপমের এমন ‘মধুর’ পুনর্মিলন দেখে চোখ কপালে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতির কারবারিদের। ভোটের দিন একদিকে যখন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের খবর আসছে, সেই সময় বোলপুরে তৃণমূল কার্য্যালয়ে গিয়ে কাকু অনুব্রতর কথায় পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজ সারছেন ভাইপো অনুপম। গতকালের এই ছবি সত্যিই বেমানান বলে মনে করছে ৬, মুরলীধর সেন লেনের একাংশ।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে
কাকুর সঙ্গে দেখা করে তবে কি বিজেপি শীর্ষ নেতাদের বকুনি খেয়েই আপাতত মিটমাট হয়ে যাবে নাকি শৃঙ্খলাপরায়ণ বিজেপিতে ‘কড়া শাস্তির’ মুখে পড়তে হবে অধ্যাপক অনুপম হাজরাকে, উঠছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে কথাবার্তা বলছি। ভোটের দিন মস্তানি করছে তৃণমূল, আর ও তাদের কাছে যাচ্ছে। তাই লোকের মনে লেগেছে। লোকেরা ভাল ভাবে নেয়নি’’। তাহলে কি অনুপমকে শোকজ করার কথা ভাবছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব? এ প্রশ্নের সরাসরি কোনও জবাব না দিয়ে দিলীপ জানান, ‘‘দলের শীর্ষ নেতত্ব কথা বলবে ওর সঙ্গে’’।
আরও পড়ুন: কাকার কাছে ভোটজয়ের ‘টিপস’ চাইলেন ভাইপো, মুচকি হাসি অনুব্রতর
অন্যদিকে, সোমবার দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, ‘‘অনুপম সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। রাজনীতির সঙ্গে একে জড়ানো ঠিক নয়। সৌজন্যকে রাজনীতির রঙে রাঙানো তৃণমূলের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে’’। তবে অনুপমের পাশে থাকলেও রাহুল সিনহা শেষে বলেন, ‘‘তবে না গেলেই ভাল হত’’।
এদিকে, কাকুর সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ নিয়ে সোমবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করে অনুপম হাজরা বলেন, এটা নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ। কারও মায়ের মৃত্যু হলে তার বাড়িতে যাওয়া সৌজন্য। যদিও পরে এই ফেসবুক পোস্টটি মুছে দিয়েছেন বোলপুরে প্রাক্তন সাংসদ। অন্যদিকে, গতকাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অনুপমের কাকু তথা বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘অনুপম চাইলে দিদিকে(মমতা) বলে রাজ্যসভার সাংসদ করব ওকে’’। কাকু-ভাইপোর এহেন রসায়ন দেখে ‘ধন্দে’ পড়ে গিয়েছেন বলে খোঁচা দিয়েছেন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। সবমিলিয়ে ভোটের বাংলায় অনুব্রত-অনুপমের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ মনে করিয়ে দিচ্ছে মুকুল-সব্যসাচীর লুচি-আলুরদম পর্বকে। দুই সাক্ষাতের ভবিষ্যৎ শেষ পর্যন্ত কোনদিকে গড়াবে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।