Lok Sabha Election Result in West Bengal 2019: বঙ্গে পদ্ম ফুটতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেনজির আক্রমণ করলেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। ‘গদ্দারের ছেলে’ মন্তব্য নিয়ে দলনেত্রীকে বিঁধে বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুক্রবার বলেন, ‘‘যাঁকে মমতাময়ী মা ভাবি, তিনিও বললেন গদ্দারের ছেলে। জানি না, বাংলার সংস্কৃতিতে গদ্দার শব্দটা কতটা মানানসই’’! এদিন তাঁর পিতা মুকুলের প্রতি তৃণমূলের আক্রমণ নিয়েও সরব হয়েছেন 'পুত্র' শুভ্রাংশু। বাবার পাশে দাঁড়িয়ে ছেলে বলেছেন, ‘‘গর্ব বোধ করি বাবাকে নিয়ে। অনেকে বলেছিলেন, লক্ষ লক্ষ মুকুল রায় তৈরি করবেন। যে (মুকুল) দল তৈরি করেছিল, সেই দলকে তছনছ করে দিল। কাঁচরাপাড়ার সেই কাঁচা ছেলেই তাঁর কাঁচা মাথা দিয়ে চাণক্যের বুদ্ধিতে সারা বাংলা চষে বেড়ালেন’’।
প্রসঙ্গত, এবার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে পদ্ম প্রতীকে লড়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন তৃণমূলের একদা বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং। এই ব্যারাকপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্র। আর সেখানে এবার তৃণমূলের হয়ে ভোট পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিধায়ক শুভ্রাংশুই। তবে ভোটের দিন সেই অর্থে বাড়ির বাইরে দেখাই যায়নি মুকুল-পুত্রকে। বাড়িতে বসেই তিনি কোনও ‘গোপন অপারেশন’ চালিয়েছিলেন কিনা, তা নিয়েও চর্চা হয় বঙ্গ রাজনীতিতে। এদিন শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘বীজপুরের মানুষ তৃণমূলকে বর্জন করেছে’’। এ প্রসঙ্গে শুভ্রাংশুর দাবি, ‘গদ্দারের ছেলে’, ‘কাঁচরাপাড়ার কাঁচা ছেলে’র মতো কথা ভালভাবে নেয়নি কাঁচরাপাড়া-হালিশহরের মানুষ। আর তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভোটের ফলে। অন্যদিকে, বাংলায় যেভাবে গেরুয়া ঝড় বয়েছে, তার অন্যতম মূল কাণ্ডারী মুকুল রায়ই। মমতার একদা বিশ্বস্ত সেনাপতির হাত ধরেই তৃণমূলের অনেকে দল বদলে পদ্ম শিবিরে ভিড়েছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দক্ষ বোট ম্যানেজার মুকুলের কৌশলেই এবার বাংলায় বিজেপি বাজিমাত করেছে।
মুকুলের এই ভূমিকার কথা এদিন প্রতিফলিত হয়েছে শুভ্রাংশুর কথায়। বীজপুরের তৃণমূলের বিধায়ক বলেছেন, ‘‘বাবার কাছে হেরে গেলাম। তবে কোনও রাগ-অভিমান নেই। আমি আমার সেরাটা দিয়েছিলাম। বাবাও তাই করেছিল। মানুষ বাবাকে গ্রহণ করেছে’’। এরপরই তৃণমূলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘মনে দুঃখ আছে, অভিমান আছে। ভেবেছিলাম লিড দেব, পারিনি। দুঃখের কথা হল, ১০০ শতাংশ দিয়েছি। অসুস্থতা নিয়েও ৪৭টি ওয়ার্ডে প্রচার করেছি। তাও দল অসম্মান করে। গদ্দারের ছেলে বলে...স্ত্রী দেখে, তৃণমূল সুপ্রিমো বলছেন গদ্দারের ছেলে’’। দলত্যাগের জল্পনা প্রসঙ্গে শুভ্রাংশু এদিন বলেন, ‘‘যদি ছুরি মারতাম, তাহলে আগেই পতাকা হাতে নিয়ে দলে চলে যেতাম...একটা ওপিনিয়ন নেওয়া দরকার। বাবার সঙ্গে কথা বলব নিশ্চয়ই’’।