Lok Sabha Election Results 2019: ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’-উনিশের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করতে রাহুল গান্ধীর এই স্লোগান রাতারাতি টক অফ দ্য টাউন হয়েছে। এ স্লোগান নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। এ স্লোগানের জেরেই সুপ্রিম কোর্টে ক্ষমা চাইতে হয়েছে কংগ্রেস সভাপতিকে। আবার রাহুলের এই স্লোগানকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে টুইটারে চৌকিদার অভিযান শুরু করেছিলেন মোদী। উনিশের রায়ে রাহুলের ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাহুলের এই স্লোগানের জেরেই এবার ভোটের লড়াইয়ে গো হারা হেরেছে কংগ্রেস, এমনটাই মনে করছেন কংগ্রেসেরই কয়েকজন শীর্ষ নেতা। ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান মানুষ ভালো ভাবে নেননি, যার ফলে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কংগ্রেসের এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘‘আমাদের কৌশল ভুল ছিল। মোদীকে চৌকিদার চোর হ্যায় বলে আমরা নেতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরেছি। এর ফলে আমাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যেটা মানুষ ভাল চোখে দেখেনি। যদিও রাহুল গান্ধী খুব খেটেছেন, তবুও তাঁর মুখে লাগাতার ওই স্লোগানকে মানুষ গ্রহণ করেনি’’।
আরও পড়ুন: এবার রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসের কী হবে?
কংগ্রেসের এক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা ও বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইকের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা ওদের (বিজেপি) জন্য অ্যাডভান্টেজ। মানুষ মোদীকে দেখে ভোট দিয়েছে, প্রার্থীকে দেখে নয়’’। অন্যদিকে, আরেক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতে, মুম্বই জঙ্গি হামলা নিয়ে স্যাম পিত্রোদার মন্তব্যে আরও অ্যাডভান্টেজ পেয়েছে বিজেপি। এসব মন্তব্যের জেরে কংগ্রেসের থেকে মুখ ফিরিয়েছে মানুষ।
অন্যদিকে, এআইসিসির সেক্রেটারি মনিকাম ঠাকুরের মতে, রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা উচিত ছিল। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে যদি রাহুল গান্ধীকে তুলে ধরা হত, তাহলে ভোটাররা বেছে নিত কাকে ভোট দেবেন। আশা করছি ওয়ার্কিং কমিটি এই ভুলগুলো শুধরে নেবে।
প্রসঙ্গত, আজই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। কংগ্রেস সূত্রে খবর, লোকসভা নির্বাচনে দলে ভরাডুবির পর ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আজ ইস্তফা পেশ করতে পারেন রাহুল। এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘অবাক হব না, যদি উনি (রাহুল) দল ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব পেশ করেন...।’’ উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিনই কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে রাহুলের ইস্তফা নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। ইতিমধ্যেই হার মেনে উত্তরপ্রদেশ ও ওড়িশার কংগ্রেস সভাপতি রাজ ব্বর ও নিরঞ্জন পট্টনায়ক ইস্তফা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মোদীকে শুভেচ্ছা রাহুলের, দু’দশক পর এই প্রথম আমেঠি হাতছাড়া কংগ্রেসের
এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের মুখে রাজনীতিতে এসে চমকে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি কোনও ম্যাজিক দেখাতে পারেননি উত্তরপ্রদেশে। বরং উত্তরপ্রদেশের যেসব এলাকায় প্রচার করেছিলেন রাহুলের বোন, সেখানে কংগ্রেস হেরেছে। এ প্রসঙ্গে এক নেতা বলেন, হঠাৎ একদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ করে দেওয়া হল। যেখানে দলের বহু কর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন দলের জন্য। অথচ তাঁরা কোনও পদ পাননি। অর্থাৎ, কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের রীতিকেই কার্যত আঙুল তুলেছেন কয়েকজন কংগ্রেস নেতা। তাঁর মতে, রাহুল, প্রিয়াঙ্কাকে দলের নেতা হিসেবে মানতে পারেনি মানুষ।
দলের আরেক সূত্রের ব্যাখ্যা, মোদীকে যেভাবে সংসদে আলিঙ্গন করেছেন রাহুল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক নেতা। পাশাপাশি কেরালার ওয়েনাড় থেকে রাহুলের ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তই হোক কিংবা বারাণসীতে মোদীর বিপক্ষে প্রিয়াঙ্কাকে দাঁড় করানো হবে কিনা, সে নিয়ে জল্পনা, সব ক্ষেত্রেই ধন্দে পড়েছেন দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশ। আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে মোদীর ভাষণে যে আবেগ ছিল তা ছুঁতে পারেনি কংগ্রেস। তাঁর মতে, মোদী অত্যন্ত সুকৌশলে এবার ভোটের প্রচারে নেমেছিলেন।
Read the full story in English