দিন তিনেক পরেই রাজ্যে ষষ্ঠ দফা লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা হল বাংলার শাসক দলের মুখপাত্র এবং রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও' ব্রায়েনের।
বিজেপির অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস তোষামোদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তারা আরও বলেছেন হিন্দুদের জন্য কিছুই করেনি আপনার দল। কী বলবেন আপনি?
বিজেপি হল এমন একটা দল, যা ভারতের বাঙাল- হিন্দু বিরোধী। ২৮০০০ দুর্গা পূজা কমিটিকে যখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১০ হাজার টাকা করে দিতে চেয়েছে, তখন বিজেপি কী করেছে? সরকারকে আদালতে নিয়ে গিয়েচ্ছে। ৪০ টা প্রথম সারির বড় ক্লাবকে ইডি-র নোটিস পাঠানো হল। চূড়ান্ত হেনস্থা করা হল ওদের। রেড রোডে বিসর্জন কার্নিভাল নিয়েও ঝামেলা করেছে ওরা। বিজেপির এনআরসি তে ২২ লক্ষ হিন্দু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রেড রোডে বিসর্জন কার্নিভাল করব আমরা। ইদের নমাজও হবে। পার্ক স্ট্রিটে বড়দিন পালনও হবে। আমরা রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দের হিন্দুত্ব বুঝি। কিন্তু ওই দুই যমজের বীভৎস হিন্দুত্ব আমরা মানি না। ধর্মের জন্য কাজ করা যদি তোষামোদ হয় তাহলে আমরা সবার তোষামোদ করি।
এই লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেস কী কী বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছে?
আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক ঘণ্টার একটা বিতর্কে অংশ নিতে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে চাইবেন, সেখানেই। শুধু ওনার সঙ্গে যেন টেলিপ্রম্পটার না থাকে। ছ'টি বিষয় নিয়ে কথা বলব আমরা। চাকরি, অর্থনীতি এবং কৃষিক্ষেত্রে এমন দুরাবস্থা, বিমুদ্রাকরণ, জিএসটি এবং 'ভারত' ভাবনা। ২০১৯ এর নির্বাচন কিন্তু কোনও দলের হার কিমবা কোনও দলের জিত নিয়ে নয়। 'ভারত' শব্দটির সংজ্ঞা কী, সেটাই নির্ণয় করা যাবে এই নির্বাচনে।
৩০ লক্ষ টাকার চুক্তিতে আমাকে খুন করাতে চাইছে বিজেপি: জ্যোতিপ্রিয়
কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং জাতীয় নিরাপত্তাই তো নির্বাচনের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারত আর পাকিস্তানের মাঝে হাইফেন চলে আসাটা খুব দুঃখজনক। এটা বিজেপির ঠিক করে দেওয়া বিদেশ নীতি। আমরা পাকিস্তানের থেকে অনেক ওপরে। আমাদের সঙ্গে চিনের নাম এক সঙ্গে উচ্চারিত হতে পারে। দশ বছর আগেও ভারত আর পাকিস্তানের নাম এক সঙ্গে উচ্চারিত হত না। কেন্দ্রের বিদেশ নীতি কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে!
নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন বাংলার উন্নয়নের স্পিড ব্রেকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে কী বলবেন?
প্রথম বারের জন্য মোদী কিছু ঠিক বললেন। মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়া আর না হওয়ার মধ্যে মমতাই তো স্পিড ব্রেকার।
এই নির্বাচনে একাধিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। বিরোধীরা কিন্তু এর জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকেই দায়ি করেছে।
বাংলায় একটাও ভোট বাতিল হয়েছে? কোথায় হয়েছে, ত্রিপুরায়। ত্রিপুরায় কোন সরকার? বিজেপি সরকার। ত্রিপুরায় ২ টো লোকসভা আসনের জন্য ভোট বাতিল হল। বাংলা এককালে দীর্ঘকাল নির্বাচনী হিংসা দেখেছে। এখন ২০০০ এর বেশি বুথের মধ্যে ৪টে বুথে বিচ্ছিন্ন হিংসার ঘটনা ঘটলে নির্বাচন কমিশনও তা উপেক্ষা করে।
আরও পড়ুন, বুকের উপর পা তোলার হুমকি দিলীপের
বিজেপি বলেছে বাংলায় ২৩টি আসনে জিতবেন তারা। কী ভাবে দেখছেন ওদের হিসেব?
২৩টা আসনের কথা ভুলে যান। বিজেপির রাজ্য সভাপতি আগে একটা আসনে জিতে দেখান। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির দুই মন্ত্রী আছেন। তাঁরা নিজেদের আসন থেকে জিততে পারবেন তো? যত বড়বড় দাবি...
প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ৪০ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, নির্বাচনের পরেই যোগ দেবেন বিজেপিতে।
আমাদের দল থেকে বহিষ্কৃত দুই সাংসদ এবং একজন বিধায়ক ওদের দলে যোগ দিয়েছেন। ওরা পুরোপুরি বিত্তিহীন কথা বলছে।