ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কর্মীরাই, এমনই অভিযোগ করলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বুধবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের মূর্তি বিজেপি ভাঙেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কর্মীরাই মূর্তি ভেঙেছে। তৃণমূলের গুন্ডারাই মূর্তি ভেঙে এখন নাটক করছে’’। এ প্রসঙ্গে মোদী সেনাপতি আরও বলেন, ‘‘কলেজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কলেজের গেট বন্ধ ছিল। গেট ভাঙাও হয়নি, অক্ষত রয়েছে। আমরা তো বাইরে ছিলাম। তৃণমূলের লোকেরা ভিতরে ছিল। বিদ্যাসাগরের মূর্তি যে ঘরে ছিল, সেই ঘরও তো বন্ধ ছিল। তাহলে কে খুলল? কার কাছে চাবি আছে?’’ মমতাকে নিশানা করে শাহ বলেন, ‘‘ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির স্বার্থেই তৃণমূল বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে’’।
LIVE: Shri @AmitShah addresses a press conference at BJP HQ. https://t.co/nQ66P7zDQN
— BJP (@BJP4India) May 15, 2019
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর প্রসঙ্গে মোদী সেনাপতি আরও বলেন, ‘‘তদন্ত করা হোক। মমতাদিকে বলছি, আপনার পুলিশ দিয়েই তদন্ত করুন। প্রয়োজনে সিট গঠন করা হোক’’।
আরও পড়ুন: বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডব, প্রতিবাদে পথে তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস
শাহ বলেন, ‘‘কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা হামলা চালাতে পারেন, এ গুজব আগেই ছিল। তাহলে কেন পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করল না? রোড শো-র তিন ঘণ্টা আগেই বিজেপির পোস্টার, ফ্লেক্স ছিঁড়ে ফেলা হয়। আমার, মোদীজির ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। পুলিশের দর্শকের মতো দাঁড়িয়েছিল। এতকিছু সত্ত্বেও বিজেপি কর্মীরা শান্তি বজায় রাখেন। শান্তিপূর্ণ ভাবে রোড শো হচ্ছিল। ৩টি হামলা হয়। শেষ হামলায় কেরোসিন বোমা ফেলা হয়। সিআরপিএফ না থাকলে হয়তো বেঁতে ফিরতাম না’’।
মমতাকে বিঁধে অমিত শাহ আরও বলেন, ‘‘আপনি শুধু ৪২টি আসনে লড়ছেন, আমরা সব রাজ্যে লড়ছি। বাংলাতেই শুধুমাত্র হিংসা হচ্ছে। অন্য কোথাও হয়নি। গত ৬ দফার ভোটে কোনও রাজ্যে হিংসা ছড়ায়নি। শুধুমাত্র বাংলাতে ছড়িয়েছে, কারণ এখানে তৃণমূল রয়েছে। বিজেপি যদি হিংসা করত, তাহলে সব রাজ্যে হত’’।
অন্যদিকে, বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙল কে? জবাব দিন অমিত শাহ। তালা ভেঙে বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকেছেন ওঁরা। ঘর থেকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি এনে ভাঙা হয়েছে। নিলর্জ্জ ওঁরা। বাংলার সংস্কৃতি বোঝেন না ওঁরা। বাইরে থেকে লোক এনে বিভ্রান্তিমুলক কথা বলছেন। পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত করতে গিয়ে বিদ্যাসাগরের গায়ে হাত লাগালেন। ক্ষমতা এতটা দরকার, যে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙবেন। আবার বলছেন, তৃণমূলের কাজ! বিদ্যাসাগরকে লাঞ্ছনা, অপমান, বাংলার সব মানুষকে অপমান’’।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কলকাতায় অমিত শাহর রোড শো ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলেজ স্ট্রিট চত্বর। শাহর রোড শো-র পরই বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডব চলে। কলেজের একটি ঘরে রাখা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়। বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ করেছে তৃণমূল। এ ঘটনার পর কলেজে যান মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ ধিক্কার মিছিলের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে পথে বাম-কংগ্রেসও।