দ্বিতীয় দফার ভোট প্রচারের শেষ লগ্নে অবশেষে হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন তৃণমূল নেত্রী।
মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে প্রচার সারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে টেঙ্গুয়ায় দলীয় প্রচার সভায় করছিলেন তিনি। সেখানেই জাতীয় সঙ্গীত গাইবার কথা হয়। তখনই হুইলচেয়ার থেকে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ান 'দিদি'। তাঁকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি ধরতে এগিয়ে আসেন। ছিলেন নিরাপত্তা রক্ষীরাও। তাঁরা মমতার দুই হাত ধরেন। কিন্তু, মাইক হাতে ধরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, 'আমি ঠিক আছি। আমাকে কাউকে ধরতে হবে না। আমি ঠেসান দিয়ে আছি। সবাই হাত জড়ো করে জাতীয় সঙ্গীত গাও।' এরপর মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে সম্পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীতটি গান তিনি।
গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরার পথে বিরুলিয়া বাজারে আহত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জখম অবস্থাতেই গাড়িতে বসেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তিনি অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন যে, ৪-৫ জন ইচ্ছাকৃতভাবে চেপে গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। গোটাটাই 'চক্রান্ত'। তাঁর নিশানায় ছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীকে এসএসকেএম-এ এনে চিকিৎসা করা হয়। তাঁর পায়ে চিড় ধরা পড়ে। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগের পরই উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। কমিশনের ঘাড়া দোষ চাপায় তৃণমূল। যদিও তদন্তের পর রাজ্যের শাসক শিবিরের 'চক্রান্তে'র অভিযোগ খারিজ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। গোটাটাই 'দুর্ঘটনা' বলে জানায় কমিশন।
যদিও থামেননি মমতা। প্রচারে গতকালই তাঁর পায়ে চিড় ধরার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে। ঝাঁঝাঁলো সুরে বলেছিলেন, 'ইলেকশনের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস। আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। আজও আমায় পা ভাঙা নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে মিটিং করতে হচ্ছে। এটা যে কত কষ্টের!' এদিনও তাঁর কথায় একই সুর ধরা পড়েছে। তাঁর কথায়, ''তোমার নির্দেশ ছাড়া এ সব হতে পারে না। কোনও নন্দীগ্রামের লোক এ সব করতে পারে না। বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে এ সব করিয়েছ তুমি।''
নির্বাচনের মুখে অবশ্য চিড় ধরা, প্লাসটার বাঁধা পায়ে বাড়িতে না থেকে হুইলচেয়ারেই ভোটপ্রচারে বরোন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে একের পর জেলা প্রচার সারচ্ছেন তিনি। 'ভাঙা পায়েই খেলা হবে' বলে স্লোগান তুলেছেন নেত্রী। যদিও অবশেষে নন্দীগ্রামে ভোটপ্রচারের শেষলগ্নে হুইলচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়়ালেন মমতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন