কমিশনের নির্দেশ কোচবিহারে যেতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ঠেকাতেই কমিশনের 'নজিরবিহীন' পদক্ষেপ বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে বসে কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেই হুঁশিয়ারির সুরে তৃণমূল নেত্রী বলেন 'আমি যদি মনে করি আমি কিছু করব, তা হলে তা করবই।' অর্থাৎ কোচবিহারের যাওয়ার কতা বলেন তিনি। কিন্তু কীভাবে? তাহলে কী কমিশনের নির্দেশ লঙ্ঘন করবেন মমতা? চর্চা যখন তুঙ্গে তখনই ফোন হাতে তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দিলেন ভিডিও কলের সাহায্যে সিআরপিএফ-এর গুলিতে নিহত শীতলকুচির চার নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। একটু পরেই শুরু হল কথোপকথন। এপারে মমতা, আর ওপারে নিহতদের পরিবার এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়।
ভিডিও কলে কী কথা হল?
শনিবার চতুর্থ দফার ভোট উত্তপ্ত হয় কোচবিহারের শীতলকুচির জোড়াপাটকি এলাকা। সিআরপিএফ-এর গুলিতে প্রাণ যায় ৪ ব্যক্তির। যা ঘিরে রৈজনৈতিক চাপানউতোর চরমে পৌঁছায়। শনিবারের পর রবিবারও কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'নির্বাচন কমিশন যা করছে তা নজিরবিহীন। শীতলকুচিতে গণহত্য়া হয়েছে। মডেল কোড অব কনডাক্ট-এর নাম বদলে মোদী কোড অব কনডাক্ট করে দিক কমিশন। ওরা মিষ্টি মুখে খুন করেছে'। কেন কমিশনের কোচবিহার প্রবেশে নিষধাজ্ঞা তা জানাতে গিয়ে মমতা বলেন, 'গুলিকান্ডের পর তথ্য চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। তাই ৭২ ঘন্টার নিষেধাজ্ঞা।'
আরও পড়ুন- ‘শীতলকুচিতে নজিরবিহীন গণহত্যা হয়েছে’, কমিশনকে তোপ মমতার
এরপরই ভিডিওও কলে দুই নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে মমতার সঙ্গে কথোপকথন হয় নিহত মনিরুজ্জামান মিয়াঁর আত্মীয়ের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীকে নিহতের আত্মীয় বলেন, 'মনিরুজ্জামান রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ভোটের জন্য কেরল থেকে বাড়ি এসেছিলেন। বুথের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। কোথা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা এসে গুলি করে পালিয়ে যায়। আমরা এর বিচার চাই। ওঁর ৪৫ দিনের সন্তান, স্ত্রী, বাবা-মা এবং ছোট ভাই রয়েছে।' সব শুনে মমতা বলেন, 'পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা হবে। এখন যেতে পারছি না। কিন্তু আমি যাব। তোমাদের সঙ্গে দেখা করব।'
তারপর নিহত হামিদুল মিয়াঁর দাদা ভিডিও কলে মুখ্যমন্ত্রীকে কান্নাভেজা গলায় বলেন, 'হামিদুলের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। একটি তিন বছরের কন্যাও রয়েছে। হামিদুলও রাজমিস্ত্রির কাজ করত। আমরা এখন কী করবো বুঝতে পারছি না।' খানিক চুপ থাকার পর মমতা, 'আমি যে ভাবে পারি সাহায্য করব। ওখানে গিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব। যা বিচার চাওয়ার চাইব।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন