ভোটের লড়াই, নাকি সাঁপ লুডোর খেলা? তা দেখে গণনার শুরু থেকে বোঝার উপায় ছিল না। প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। সময় যত এগিয়েছে ব্যবধানও বাড়ছিল। সম্মানের লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদৌ জিতবেন কিনা তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, গণনা ১৪তম রাউন্ডে যেতেই পাশা উল্টে যায়। শুভেন্দুকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যান তৃণমল সুপ্রিমো। শেষ পর্যন্ত ১২০০ ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে শেষ হাসি হাসলেন মমতাই।
যদিও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রথমদিকে পিছিয়ে থাকলেও জেতার বিষয়ে প্রত্যয়ী ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কালীঘাটের বাড়িতে বসেই তিনি জানিয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে তৃণমূলই জিতবে। বাস্তবেও হল তাই। হাইভোল্টেজ লড়াই হল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত মমতার কাছে হার মানতেই হল শুভেন্ধু অধিকারীকে।
ডিসেম্বরের শেষে শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পর পরই জানুয়ারিতে নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় আচমকাই নন্দীগ্রাম আসন থেকে একুশের ভোটে লড়াই করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। সভায় তখন 'দিদি'র ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে ফেটে পড়ে করতালি।
তারপরই মমতাকে নিসানা করেন শুভেন্দু। কালীঘাট এলাকায় সভা করে ওইদিনই হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রীকে নন্দীগ্রামে হাফ লাখ ভোটে হারাবেন। প্রার্থী তিনি বা অন্য কেউ হলেও ফল একই হবে। শেষ অব্দি অবশ্য নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীতেই লড়াইয়ের সৈনিক হিসাবে আস্থা রেখেছিলেন মোদী-শাহ-নাড্ডারা। প্রচারে শুভেন্দুকে 'বেইমান-মীরজাফর-গদ্দার' বলে তোপ দাগেন মমতা। প্রচারে মমতা-শুভেন্দু টক্কর ছিল নজরকাড়া।
ভোটের দিনই নন্দীগ্রামে উত্তাপ ছিল তুঙ্গে। বয়ালের বুথে ভোটে কারচুপির অভিযোগ, মমতার দু'ঘন্টার বেশি সময় বসে থাকা সহ নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোট ছিল ঘটনাবহুল। গণনাতেও সেই আঁচ পড়ল। নন্দীগ্রাম ভরসা রাখলে বাংলার মেয়েতেই। শুভেন্দুকে পরাজিত করে জিতলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন