Advertisment

কেন জোট ব্রিগেডে নেই বামেরা?

ব্রিগেডে মিটিং হবে, উঁচুতে মাচা বাঁধার কাজ সারা। এ ব্রিগেডে নেই লালের ছোঁয়া। তাঁরা মুখ ঘুরিয়ে রেখেছেন, এ সমাবেশের ওপর তাঁদের অনাস্থা, প্রকাশ্যে অন্তত প্রবল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

এই কর্মকাণ্ডে গরহাজির বামেরা

একদা ব্রিগেড ছিল সিপিএম তথা বামফ্রন্টের। সে রাম নেই, নেই সে অযোধ্যাও। বামফ্রন্ট অবশ্য আছে। গোটা দেশের বিরোধী শিবির যখন ব্রিগেডে একজোট হচ্ছে, তখন নিজস্ব যুক্তিতে, অথবা বাধ্য়বাধকতায় বামফ্রন্টের শরিকরা মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন ব্রিগেড থেকে। বড় শরিক সহ কয়েকটি দলের সঙ্গে কথা বলে যা জানা গেল।

Advertisment

"কটা আসন ছাড়বেন মমতা?"

২০১১ সালে মমতা সরকার গঠিত হওয়ার পর, এ রাজ্যে অঘোষিত জোট গড়ে তুলে শিলিগুড়ি পুরসভাকে তৃণমূলের হাতের বাইরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন এই সিপিএম নেতা। কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধী জোট গড়ে তোলা নিয়ে তখনও সিদ্ধান্ত হয়নি সিপিএমে। তার আগেই হাতে কলমে জোট রাজনীতি এবং তার ফলাফলের উদাহরণ তৈরি করে দিয়েছিলেন যিনি, সেই অশোক ভট্টাচার্য বিজেপি-বিরোধী জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান।

ব্রিগেড সমাবেশ এবং তাতে বিরোধী জোটের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, "এ জোট কি নির্বাচনী জোট না কি রাজনৈতিক জোট? ব্রিগেডের সভায় যেসব দলের প্রতিনিধিরা আসছেন, তাঁদের কটা আসন ছাড়বেন মমতা?"

publive-image চার শরিকের পতাকা

অশোকবাবুর বক্তব্য, এ রাজ্যে তৃণমূলের পৃষ্ঠপোষকতাতেই বিজেপি-র উত্থান হয়ে চলেছে। তবে মানুষ এসব বোঝেন বলেই তাঁর দাবি। তিনি বলছেন, "দেশের সব রাজ্যে যখন বিজেপি-র শক্তি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে।" তবে ভোট রাজনীতিতে এর খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলেই বিশ্বাস অশোকবাবুর। তাঁর ধারণা, "বিজেপি এবারের লোকসভা ভোটে দুটি আসনও পাবে না এ রাজ্য থেকে, আসন কমবে তৃণমূলেরও।" তবে সে আসনগুলিতে কারা জিতবেন, তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেন নি তিনি।

"কংগ্রেসের নেতারা যাই বলুন না কেন, ভোটবাক্সে তার প্রতিফলন পড়ে না।"

ব্রিগেডের জোট নিয়ে রাজ্য রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতের কথা বললেন আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী। সেই পরিপ্রেক্ষিতে "বামেদের সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল্যায়ন এবং রাজ্যের বিরোধীদের প্রতি সরকারের আচরণ" যে একেবারেই নেতিবাচক, এমনটাই মনে করেন এই বর্ষীয়ান নেতা এবং বাম আমলের মন্ত্রী। একই সঙ্গে রাহুলের ব্রিগেড নিয়ে চিঠি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "এর আগে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে আমরা দেখেছি, কংগ্রেসের নেতারা যাই বলুন না কেন, ভোটবাক্সে তার প্রতিফলন পড়ে না। রাহুল নেতাদের প্রভাবিত করতে পারেন, কর্মীদের নয়।" তবে নির্বাচনী জোট নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না। মানুষের স্বার্থই অগ্রগণ্য। অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে দল।"

"ভোজবাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে এলে জোট হয় না।"

ফরোয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "ভোজবাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে এলে জোট হয় না।" তিনি বলেন, "জোট গড়ে ওঠে রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে, সে যতই নির্বাচনী জোট হোক না কেন। যারা ব্রিগেডের সভায় আসছেন, তাঁদের জোটবদ্ধ রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস নেই।" এ প্রসঙ্গে জ্যোতি বসু-বাজপেয়ীর ব্রিগেডে জোট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নরেনের উত্তর, "জনসংঘকে নিয়ে বামেদের যৌথ আন্দোলনের ইতিহাস ছিল, তারই ফলশ্রুতি ছিল ওই জোট। এখানে ভোজবাড়িতে নেমন্তন্ন করা হয়েছে, সবাই আসছেন, ফিরে গিয়ে কারা বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলাবেন তার ঠিক নেই।"

"ঠিক সময়ে বিজেপি- এবং তৃণমূল-বিরোধী জোট হয়ে যাবে।"

রাজ্যের প্রেক্ষিত ছাড়তে নারাজ সিপিআই। দলের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্য়োপাধ্যায় বললেন, "এ রাজ্য যেভাবে বিরোধীশূন্য করতে চান তৃণমূল নেত্রী, ঠিক সেভাবেই দেশকে বিরোধীশূন্য করতে চান নরেন্দ্র মোদী। ফলে মোদীকে সরাতে মমতার সঙ্গে জোট হতে পারে না।" তাহলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কী হবে? স্বপনবাবুর বক্তব্য, বিজেপি- এবং তৃণমূল-বিরোধী ভোট এক জায়গায় আনার চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক সময়ে হয়ে যাবে।"

Mamata Banerjee lok sabha 2019
Advertisment