অনেক আগেই দল ছেড়েছিলেন একসময়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে বিজেপির পক্ষে গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। এখন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি পদে রয়েছেন মুকুল রায়। এদিকে গতবছর ডিসেম্বরে বিজেপিতে এসেছেন দাপুটে তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে শেষ দিনের প্রচারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দুর থেকে মুকুলকে এগিয়ে রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নির্বাচনের দুদিন আগে কেন দুই প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে নিয়ে এমন তুলনা টানলেন তা নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
এর আগে মুকুল রায়কে গদ্দার বলতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। আরও নানা বিশেষণে বিদ্ধ হতে হয়েছে মুকুল রায়কে। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়ার কাছে ভেকুটিয়া গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "মুকুল বেচারা থাকে কাঁচরাপাড়ায়, পাঠিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগরে। মুকুল শুভেন্দুর মত এত খারাপ নয়। অন্তত এটা আমি বলব।" হাস্যরসাত্মক ভঙ্গীতেই একথা বলেছেন মমতা। তৃণমূলনেত্রীর মুখে ছিল মুচকি হাসির ঝলক। তবে মমতার মুকে মুকুলের প্রশংসা শুনে অনেকেই হকচকিয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন, হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রাম! শেষ দিনের প্রচারে ঝড় বঙ্গ রাজনীতির এপিসেন্টারে
তবে এখানেই থামে যাননি তৃণমূলনেত্রী। মুকুল-শুভেন্দু তুলনা টেনেই একটু সামলে নিয়ে তিনি বলেন, "যাই হোক আমার বলার দরকার নেই। ওরা যখন বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এটা ওদের ব্যাপার। ওরা অন্য রাজনৈতিক দল করে। তাঁরা নিজেরা চিহ্নিত হয়েছে। আমাদের দল ছেড়ে দিয়েছে। বিজেপি দলে গিয়েছে। ওরা ভাল থাকুক, সুখে থাকুক। আমার কোনও যায় আসে না।"
নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। শুধু রাজ্য-রাজনীতি নয়, সারা দেশের সকলের এই মুহূর্তে নজর রয়েছে এই আসনের দিকে। সেই কেন্দ্রের একেবারে শেষলগ্নের প্রচারে মমতার শুভেন্দু ও মুকুলের তুলনামূলক ভাল-মন্দের বিচারে সুক্ষ্ম রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন অভিজ্ঞ মহল।
আরও পড়ুন,নন্দীগ্রামে প্রচারের শেষ লগ্নে হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন মমতা
রাজনৈতিক মহলে মতে, শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে গিয়ে তাঁকে মুকুলের থেকেও খারাপ বলে প্রতিপন্ন করলেন মমতা। অথচ গদ্দার, বিশ্বাঘাতক বিশেষণ প্রয়োগ করা হয়েছিল মুকুল রায়ের বিরুদ্ধেও। মুকুলই শুভেন্দুর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। নন্দীগ্রামের মাটিতে বসে নির্বাচনী শেষপ্রচারে মুকুল সম্পর্কে নরম মনোভাবের পিছনেও রাজনৈতিক রণকৌশল দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কারও কারও ডিভাইড অ্যান্ড রুলের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এই সভাতে তিনি ফের বলেন, "গোখরোদের, মীরজাফর, বিশ্বাসঘাতকদের মাফ করব না।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন