তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিক ভাবে চাপে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নির্বাচনের স্নায়ু যুদ্ধে নিজেকে এগিয়ে রাখতে চাইছেন বাংলা রাজনীতির এখনকার চাণক্য। নির্বাচনে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি থেকে শুরু করে, নির্বাচন কমিশনের ওপর নানাভাবে চাপ তৈরি করছেন। প্রতি দফায় ভোটের পর তিনি বলছেন, ২-০, তারপর দ্বিতীয় দফায় বললেন, ৩-০। অর্থাৎ মুকুলের দাবি অনুযায়ী, দুই দফার নির্বাচনে বিজেপি তৃণমূলের থেকে এগিয়ে গিয়েছে ৫-০ ফলে।
শনিবার তিনি বুনিয়াদপুরে নরেন্দ্র মোদীর সভার পর বলেন, "মোদীজিকে বাংলায় প্রার্থী হতে অনুরোধ করেছি। শুনে হেসেছেন, না বলেন নি।" অভিজ্ঞ মহলের মতে, তৃণমূল নেতৃত্বকে চাপে ফেলতে নিত্য নতুন কৌশল নিচ্ছেন মুকুল।
বুনিয়াদপুরে কী বলেছেন মুকুল রায়? তিনি বলেন, "বিজেপি রাজ্য শাখার পক্ষ থেকে, পশ্চিমবঙ্গ বাসীর পক্ষ থেকে, মোদীজিকে অনুরোধ করলাম যে এখান থেকে প্রার্থী হন। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় এখনও ৩০ টি আসনে ভোট বাকি রয়েছে। ২৩ তারিখ পাঁচটি আসনে ভোট। সেটা বাদ দিলে, এখনও ৩০ টি আসন বাকি রয়েছে। মোদীজিকে অনুরোধ করলাম যে, বাংলাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য, মমতার জল্লাদ বাহিনীর হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত করার জন্য এখান থেকে প্রার্থী হন। উনি শুনেছেন, হেসেছেন। কিন্তু একেবারে না বলেন নি।"
এ রাজ্যে সাত দফায় নির্বাচন হবে। ভোট চলাকালীন নানা কৌশলও চলবে। যেহেতু মমতার একসময়ের প্রধান সেনাপতির কাছে এই লোকসভা নির্বাচন একপ্রকার অগ্নিপরীক্ষা। কিছুদিন নীরব থাকার পর ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি হিসাবে দলে ছিলেন। কিন্তু ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে একেবারে সম্মুখ সমরে মমতা-মুকুল। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, তৃণমূল নেতৃত্বকে কিভাবে চাপে রাখা যায়, তা মুকুল রায়ের চেয়ে ভাল কেউ জানেন না। ভোটের আগে থেকেই একাধিকবার তিনি বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। ইতিমধ্যে কেউ কেউ পদ্মশিবিরে নামও লিখিয়েছেন।
এর আগেও নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ এ রাজ্য থেকে ভোটে দাঁড়াতে পারেন বলে গেরুয়া মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। জয়ের ব্যাপারে এতটাই নিশ্চিত যে, দেশের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র বারানসী থেকে এবারও প্রার্থী হয়েছেন মোদী। গুজরাট থেকে এবার আর তিনি নির্বাচনে লড়ছেন না। তাই রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এ রাজ্য থেকে নরেন্দ্র মোদীর দাঁড়ানোর কোনও সম্ভাবনাই নেই। ইতিমধ্যে রাজ্যের সব আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে বিজেপি। তারপর ভোট চলাকালীন মুকুল রায়ের এই মন্তব্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে ৬, মুরলীধর লেনে বিজেপির সদর দফতরেও।