যেমন হঠাৎ আবির্ভাব, তেমনই আচমকা তিরোধান। গত সপ্তাহে লোকসভা প্রচার শেষ হতেই ডিটিএইচ প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামাঙ্কিত, বিজেপির টাকায় লালিত-পালিত নমো টিভি, যার উদ্দেশ্য ছিল জনগণের সামনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কৃতিত্ব তুলে ধরা। স্বল্পায়ু এই চ্যানেল তার জন্মলগ্ন থেকেই জড়িয়ে পড়েছে একের পর এক বিতর্কে। কিছুদিনের জন্য কন্টেন্ট টিভি নাম নিয়েও চলে এই চ্যানেল, ডিটিএইচ প্ল্যাটফর্মে যার প্রথম প্রকাশ ৩০ মার্চ, ২০১৯-এ।
গোড়ায় চ্যানেলের মালিকানা গোপন রাখা হলেও বিজেপি পরে জানায়, নমো অ্যাপ, যার অন্তর্গত নমো টিভি, দলেরই আইটি সেল দ্বারা পরিচালিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানান, "নমো টিভি বিজেপির লোকসভা প্রচারে হাতিয়ার ছিল। ভোট শেষ, কাজেই আর এর দরকার নেই। ১৭ মে যেই প্রচার বন্ধ হলো, চ্যানেলও হাওয়া।"
আরও পড়ুন: নমো টিভিতে প্রজ্ঞা ঠাকুরের অনুষ্ঠান: সম্প্রচারে ছাড়পত্র ‘সাইলেন্স পিরিয়ড’ শুরুর পর
কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি সহ বিভিন্ন বিরোধী দল নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করে জানতে চায়, নমো টিভি আদৌ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুমোদন পেয়েছে কিনা, এবং আদর্শ আচরণবিধি লাগু হওয়ার পরেও কোনও রাজনৈতিক দল চ্যানেল চালু করতে পারে কিনা। মন্ত্রকের তরফে অবশ্য জানানো হয়, ডিটিএইচ অপারেটরদের "প্ল্যাটফর্ম পরিষেবা" হওয়ার দরুন সরকারের কাছ থেকে ওই চ্যানেলের কোনোরকম আপলিঙ্ক/ডাউনলিঙ্কের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
এরপর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, অন্যান্য প্রচারের ক্ষেত্রে যেমন নির্বাচনের প্রত্যেক দফার ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে 'নির্বাচনী নীরবতা' লাগু হয়, তেমনই হবে নমো টিভির ক্ষেত্রেও। এছাড়াও চ্যানেলের সমস্ত অনুষ্ঠান এবং বিজ্ঞাপনের খাতে খরচের হিসেব চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী এবং দলের নামে দেখাতে হবে।
টাটা স্কাই, ভিডিওকন এবং ডিশ টিভি সমেত আরও অনেক কেবল টিভি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা সারা দেশের গ্রাহকদের কাছে বিনামূল্যে পৌঁছে দেয় নমো টিভি। ওই চ্যানেলে মূলত সম্প্রচার করা হতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ এবং নির্বাচনী বার্তা, পর্দার নিচের দিকে দেখা যেত প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উক্তি - তাঁর ভাষণ এবং মিডিয়া সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতি।