Advertisment

কেন নরেন্দ্র মোদীর সভা হয়ে গেল মতুয়া মহাসংঘের সমাবেশ?

প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুরনগরের রাজনৈতিক জনসভা বদলে গেল মতুয়া মহাসংঘের সভায়। কেন বদল ঘটল এই জনসভার? কারণ নির্বাচন যে বড় বালাই!

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
pm modi, প্রধানমন্ত্রী মোদী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার/ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

এরাজ্যে লোকসভা অভিযানের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা হবে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের ব্যানারে। সেই জনসভায় অংশগ্রহন করবে বিজেপি। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পদ্মশিবির। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী প্রথম জনসভা করবেন দুর্গাপুরের নেহেরু স্টেডিয়ামে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুরনগরের জনসভা নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে মতুয়াদের মধ্যে। সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘ প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অভিসন্ধি বলে দাবি করেছেন। কিন্তু কেন মতুয়াদের সভায় প্রধানমন্ত্রী?

Advertisment

রাজ্য বিজেপির কর্মসূচি অনুযায়ী, ২ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুর ও ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রী জনসভা করবেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলের এই দুই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন দলের রাজ্য দপ্তরে। পরবর্তীতে ঠাকুরনগরে কোন মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভা হবে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ওই মাঠে সর্বভারতীয় মতুয়া সংঘের ধর্মীয় কর্মসূচি রয়েছে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই নিয়ে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর প্রতিবাদও করেন। রেললাইনের ধারে সভার অনুমতি দেয়নি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তা দল। কাজেই সভা হবে ঠাকুরবাড়ির পাশে কামনা-সাগরের মাঠে।

আরও পড়ুন: রাজ্যে তৃণমূলের কোনও বিকল্প নেই: সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শান্তনু ঠাকুর বলেন, "আমাদের আহ্বানে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। আমি নিজে লেটার হেডে আমন্ত্রন জানিয়েছি। নাগরকিত্ব বিল পাশ হয়েছে, তা নিয়ে তিনি বক্তব্য রাখবেন।" মতুয়ারা দশ দফা দাবি প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন বলে তিনি জানান। দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম, গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়া, হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথিতে জাতীয় ছুটি ঘোষণা, ও ওই দিনের সমাগমে মতুয়া ভক্তদের জন্য বিনা শুল্কে ট্রেনে যাতায়াত। বাংলাদেশে মতুয়াদের বেশিরভাগ সংখ্যক আত্মীয় আছেন। কাজেই পাসপোর্ট প্রদান প্রক্রিয়ার সরলীকরণ করতে হবে। মেডিক্যাল কলেজের দাবিও রয়েছে তাঁদের। সম্ভবত ওই দিন মতুয়াদের বেশ কিছু দাবীকে মান্যতা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

ওদিকে মতুয়াদের অন্য সংগঠন, সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছেন। এই সংগঠনের সহ-সভাপতি অভিজিত বিশ্বাস বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০ বছর ধরে আমাদের সঙ্গে আছেন। মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। এত যুগ ধরে কেউ আসেন নি। কেন এখন এখানে আসতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে? ঠাকুরবাড়িতে একটা ইঁটও ছিল না। তখন মুকুল রায়ের হাত থেকেও অনুদান পেয়েছি।"

সোমবার দিলীপ ঘোষ জানান, মতুয়া মহাসংঘের আহ্বানে সম্মাননা সভা হবে ঠাকুরনগরে। প্রধানমন্ত্রী নাগরিকত্ব বিল পাশ করিয়েছেন, তাই সংবর্ধনা পাচ্ছেন তিনি। রাজনৈতিক সভা নয়, তবে বিজেপি আমন্ত্রিত। ওখানকার ধর্মীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেবেন।

আরও পড়ুন: নাম না করে মোদীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যে স্বপ্ন’ দেখানোর অভিযোগ বিজেপি নেতার

ইতিমধ্যে নাগরিকত্ব বিলের মাধ্যমে মতুয়াদের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিজেপি। এর আগে আসামে এনআরসি তালিকা প্রকাশের সময় মতুয়াদের একটা বড় অংশ রেল রোকো করেছিলেন রাজ্যে। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভার ভোটে আর ঝুঁকি নিতে চাইছে না বিজেপি। মতুয়াদের আরও বেশ কিছু দাবির বিষয়ে ২ ফেব্রুয়ারির সভায় বক্তব্য রাখবেন মোদি।

মতুয়া সংঘ সূত্রে খবর, সারা রাজ্যে প্রায় ৮৩ টি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন এই সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই হিসাব মেনেই আন্দাজ ১২টি লোকসভা কেন্দ্র জয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারেন মতুয়ারা। অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, মতুয়াদের সঙ্গে সখ্যতা স্থাপন করতে বাধ্য রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি। যে কারণে রাজনৈতিক সভা রাতারাতি হয়ে গেল মতুয়া মহাসংঘের সভা।

narendra modi General Election 2019
Advertisment