দল বদলে বিজেপিতে এসে টিকিট পেয়েছিলেন ছ'জন। তাঁদের পাঁচজনের মুখেই হাসি ফুটল ফলপ্রকাশের পর।
দলের কলেবর বৃদ্ধি করতে হলে দরজা খোলা রাখতে হবে। তৃণমূল জমানায় এই কৌশলকে প্রায় শিল্পে পরিণত করেছিলেন যিনি, সেই মুকুল রায় বছর দেড়েক আগে দল বদলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তার পর থেকেই নিয়ম করে জোড়া ফুল ছেড়ে পদ্ম ফুলে যোগ দিয়েছেন একের পর এক তৃণমূল নেতা। মুকুলের হাতযশে সিপিএম-সহ অন্য দল থেকেও নেতারা এসেছেন বিজেপিতে। এ-বার তাঁদের মধ্যে বিজেপি-র টিকিট পেয়েছেন মোট সাতজন। তাঁদের চারজন এসেছেন তৃণমূল থেকে, একজন সিপিএম এবং একজন আদিবাসী বিকাশ পরিষদ থেকে। দেখুন, নির্বাচনে কেমন ফল করলেন এই নব্য বিজেপিরা।
ব্যারাকপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন ভাটপাড়ার চারবারের তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে অর্জুনের জয় প্রায় নিশ্চিত। অর্জুনের ছেড়ে যাওয়া ভাটপাড়ায় বিধানসভা উপনির্বাচনেও জয় পেয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের মদন মিত্রকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন অর্জুনের ছেলে পবন সিং।
বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে বিজেপি-র টিকিটে তৃণমূল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়া বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁর জয় প্রায় নিশ্চিত। সৌমিত্রের জয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আদালতের নির্দেশে তিনি নিজে এলাকায় প্রচারও করতে পারেন নি।
কোচবিহার কেন্দ্রেও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিকের জয় প্রায় নিশ্চিত। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে একাধিকবার বাগযুদ্ধে জড়িয়েছেন এই নেতা। নির্বাচনের দিনও তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে নিশীথের অনুগামীদের।
মালদহ উত্তর কেন্দ্রে পদ্ম-প্রার্থী খগেন মুর্মুর জয়ও প্রায় নিশ্চিত। গত বছর সিপিএমের হয়ে লোকসভায় লড়াই করা খগেন নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর লড়াই সহজ ছিল না। প্রতিপক্ষ ছিলেন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মৌসম বেনজির নূর।
আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন বিজেপির জন বার্লা। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মী এই আদিবাসী নেতা আদিবাসী বিকাশ পরিষদ ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন।
নব্য বিজেপিদের মধ্যে হেরে গিয়েছেন দুজন। যাদবপুরে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক তথা বোলপুর থেকে তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ অনুপম হাজরা। তিনি মিমি চক্রবর্তীর কাছে হারলেও সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় হয়েছেন।
ঘাটালে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। তিনি কখনও তৃণমূলের সদস্য হন নি ঠিকই, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গলমহলে মা বলে সম্বোধন করা এই প্রাক্তন দাপুটে পুলিশ অফিসার ছিলেন রাজ্যের শাসকদলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তিনি হারতে চলেছেন তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেতা দেবের কাছে।