Advertisment

Exclusive: 'নেই উন্নয়ন, থমকে ১০০দিনের কাজ' ক্ষোভে ফুঁসছেন পশ্চিম ঘুঘুমারির রাজবংশীরা

গ্রামে রাস্তা হয়নি, পানীয় জলের সমস্য়া, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এখনও আবাস যোজনার কোনও বাড়ি কেউ পায়নি। ক্ষোভে ফুঁসছেন রাজবংশীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

উন্নয়নের পথ চেয়ে। এক্সপ্রেস ফটো- পার্থ পাল

কোচবিহারের পশ্চিম ঘুঘুমারি গ্রামের প্রায় দুশো পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশই গ্রামে ফিরে এসেছেন। এখানে কেউ টোটো চালাচ্ছেন, কেউ বা দিনমজুরকে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন। গ্রামে রাস্তা হয়নি, পানীয় জলের সমস্য়া, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এখনও আবাস যোজনার কোনও বাড়ি কেউ পায়নি। ক্ষোভে ফুঁসছেন এই গ্রামের রাজবংশীরা। উন্নয়নের দাবি করলেও এখানকার অনেকেই পৃথক রাজ্যের দাবি থেকেও সরে এসেছেন। সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা।

Advertisment

পশ্চিম ঘুঘুমারির জথুম ত্রিপতীতে ঢুকেই দেখা মিলল বছর ষাটের সুবল দাসের সঙ্গে। তিনি কামতাপুরিদের পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন দেখেছেন। রাজবংশীদের ভোটে লড়াই করতেও দেখেছেন সুবলবাবু। এবার জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের ময়দানে নেমেছে কামতাপুরি দলগুলো। কাঠমিস্ত্রি সুবলবাবু মনে করেন, "পৃথক রাজ্য হলেই রাজবংশীদের উন্নয়ন সম্ভব। এই গ্রামেই দেখুন রাস্তা নেই, জলের অভাব। সকলেই প্রায় দিনমজুরের কাজ করে। সরকারি চাকরি নেই বললেই চলে। ১০০ দিনের কাজ থমকে যায় ১৪ দিনে।"

আরও পড়ুন, Exclusive: “এদেশে এসে সব হারিয়েছি,” জীবন-যন্ত্রনার কাহিনী অধুনা ছিটমহলের বাসিন্দাদের

সুবলবাবু উত্তরবঙ্গে রাজবংশীদের জন্য আলাদা রাজ্যের দাবিতে এখনও সরব হলেও পরবর্তী প্রজন্মের একটা বড় অংশ কিন্তু ওই দাবি থেকে সরে এসেছে। তাঁদের দাবি, শিক্ষার ও কাজের। একসময় অর্থ রোজগার করতে ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন ৩৫ বছরের খোকন বর্মন। মা, স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে সংসার। কাঠমিস্ত্রি খোকন বলেন, "আলাদা রাজ্য নয়। চাই উন্নয়ন, কাজ ও শিক্ষার প্রসার। বিভেদ নয়, এক সঙ্গে চলতে হবে।" রাজস্থানের মালবিয়া  নগরে কাজ করতেন ২৬ বছরের নয়ন রায়। সেখানে চার বছর ছিলেন। লকডাউনের পর চলে এসেছেন গ্রামে। নয়ন এখন দিনমজুরের কাজ করে সংসারে অর্থের যোগান দেন।

publive-image
এক্সপ্রেস ফটো- পার্থ পাল

আরও পড়ুন, খলিসামারির পঞ্চানন বর্মা সংগ্রশালার কোট, পোষাক-পরিচ্ছদ, যাবতীয় সামগ্রী কার?

এই গ্রামে মদন বর্মন ও সাধন বর্মন, দুই ভাই বিএসএফে চাকরি পেয়েছেন। জানান নয়ন। ওই পর্যন্তই, এখানকার তিনশো রাজবংশী পরিবারের আর একজনও সরকারি চাকরি পাননি। তাই শিক্ষিত বেকাররা প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে সংসারে অর্থের যোগান দেন, বলেন সুবলবাবু। মাটির মূর্তি তৈরি করেন ৪৬ বছরের নন্দ বর্মন। তিনি এই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য। কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রে নির্বাচন ১০ এপ্রিল। নন্দ বর্মন সিপিএম থেকে ভায়া তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে এখন বিজেপিতে ভিড়েছেন। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে জয় পান। ২০০৬ থেকে সিপিএম করতেন, তৃণমূলে যোগ ২০১১-তে। নন্দ বর্মন বলেন, "আমার কথা গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তারা শোনেন না। এই গ্রামে আমার সময়ে একটা সরকারি আবাস যোজনার বাড়ি কেউ পায়নি। গ্রামে রাস্তা হয়নি, পানীয় জলের সংকট আছে। অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বাইরের রাজ্যে কাজ করেন।" একজন পঞ্চায়েত সদস্য স্বয়ং নিজএলাকার অনুন্নয়নের হিসেব দিচ্ছেন! তিনি মনে করেন, "আলাদা রাজ্য নয়, সবাইকে একসঙ্গে হাত মিলিয়ে উন্নয়নের কাজ করতে হবে। রাজ্যে শিল্প হলেই উন্নয়ন হবে।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

West Bengal Assembly Election 2021
Advertisment