আমেঠি ও রায়বেরেলিতে আসনে গান্ধী পরিবারের রাজনৈতিক লড়াইয়েই ইতি? লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে, কংগ্রেসের পক্ষে আমেঠি এবং রায়বরেলিতে প্রার্থী নির্ধারণ করা খুব কঠিন হয়ে উঠছে। এখন গান্ধী পরিবারও দুটি আসনে দূরত্ব বজায় রেখেছে।
লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে, কংগ্রেস আমেঠি এবং রায়বরেলি আসন নিয়ে একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্রের খবর, এবার গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য আমেঠি ও রায়বেরেলি থেকে নির্বাচনে লড়বেন না। এমন পরিস্থিতিতে এখন উত্তরপ্রদেশে গান্ধী পরিবারের রাজনৈতিক লড়াই থমকে গেছে। এই প্রথম গান্ধী পরিবারের কোনো সদস্য উত্তরপ্রদেশ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না।
সূত্রের খবর, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবার লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন না। এবার শুধু দলের প্রচার ও সংগঠনের দিকেই নজর দিতে চান তিনি। অন্যদিকে রাহুল গান্ধীও শুধুমাত্র কেরলের ওয়ানাডে থেকে নির্বাচনে লড়ছেন। এবার তিনি আমেঠি থেকে নির্বাচনে লড়বেন না বলেও জানা যাচ্ছে। সনিয়া গান্ধী এবার রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। লোকসভার লড়াই থেকে তিনি বিরতি নিয়েছেন।
গত ২৬ বছরে এই প্রথম গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য আমেঠি আসন থেকে নির্বাচনে লড়বেন না। এই আসনে ১৯৯৯ সালে সনিয়া গান্ধী এবং তারপর ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে রাহুল গান্ধী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি ২০০৪,২০০৯ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতেছিলেন কিন্তু ২০১৯ সালে বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান রাহুল।
সনিয়া গান্ধীও ২০০৪ সাল থেকে একটানা রায়বেরেলি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং জয়ী হয়েছেন। এখন তিনি রাজ্যসভায় চলে যাওয়ার পর এই আসনটি শূন্য হয়ে যায়। ২০০৪,২০০৯,২০১৪ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে সনিয়া গান্ধী এই আসনে টানা জিতেছিলেন। যদিও সূত্রের খবর গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য ২৪-এর নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস জোটের অধীনে ১৭ টি আসন পেয়েছে। যার মধ্যে ১৫ টি আসনের জন্য ইতিমধ্যেই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমেঠি ও রায়বেরেলিতে প্রার্থীদের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি। আমেঠি-রায়বরেলি নিয়ে এখনও সাসপেন্স বজায় রেখেছে কংগ্রেস। এখন এটাই বড় প্রশ্ন গান্ধী পরিবার কি ঐতিহ্যবাহী এই আসন দুটি ছেড়ে দিচ্ছে নাকি রাহুল গান্ধী শেষ মুহূর্তে বড় চমক দিতে তৈরি?
আরও পড়ুন - Dilip Ghosh: ‘রাজনীতি ছেড়ে গরু চড়াও!’, মেজাজ হারিয়ে দলের কর্মীদের বকাঝকা দিলীপের, কী এমন হল?
আমেঠি হল গান্ধী পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত একটি আসন। প্রয়াত সঞ্জয় গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী এই আসনের সাংসদ ছিলেন। দীর্ঘদিন এখানে কংগ্রেসের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। নির্বাচনী উত্তেজনার মধ্যে, মনে করা হয়েছিল যে রাহুল গান্ধী আমেঠি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন এবং প্রিয়াঙ্কা রায়বেরেলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। কখনও কখনও কংগ্রেস নেতারাও একই দাবি করেছেন। ওয়ানাড নির্বাচনের পরে রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কার নাম ঘোষণা করা হবে বলে আলোচনা হলেও বাস্তবে কিন্তু তা হয়নি। এখন রাজনৈতিক মহলে একটি সাধারণ আলোচনা হয়ে উঠছে যে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য আমেঠি এবং রায়বেরেলি থেকে নির্বাচনে লড়বেন না।
এখন মনোনয়নের আর মাত্র তিন দিন
বিজেপির পর এখন বিএসপিও আমেঠি থেকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সোমবার বিজেপির স্মৃতি ইরানিও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বুধবারও বিএসপি প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। এমন অবস্থায় কংগ্রেসের সাসপেন্স রাজনৈতিক জল্পনার জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত এই দুটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করা শুধু আমেঠি, রায়বরেলি নয়, গোটা দেশেই আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এখন মনোনয়নের আর মাত্র তিন দিন বাকি। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।