যখন একসঙ্গে তৃণমূলে ছিলেন, তখন ছিল সাপ-নেউলে সম্পর্ক। মুখ দেখাদেখি প্রায় করতেন না। দলও তাঁদের কোন্দল সামাল দিতে যথেষ্ট বেগ পেত। এবার সম্মুখ সমরে দুই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। কথা হচ্ছে, সুজিত বোস এবং সব্যসাচী দত্তর। এবার রাজ্যের মন্ত্রীর বিপক্ষে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রকে প্রার্থী করে বিজেপি। লড়াই যে জমজমাট হবে, তা এখনই বুঝতে পারছেন বিধাননগরবাসী।
দু’জনে দীর্ঘদিন একই এলাকায় রাজনীতি করেছেন। সুজিত এখনও বিধাননগরের বিধায়ক। আর সব্যসাচী দেড় বছর আগে পর্যন্ত ছিলেন ওই বিধাননগর পুরনিগমের তৃণমূলের মেয়র। খাতায়-কলমে তিনি এখনও রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু একই দলে থাকাকালীনও সুজিত-সব্যসাচী সম্পর্ক কতটা ‘মধুর’ ছিল, তা সল্টলেক, রাজারহাট, নিউটাউন জুড়ে সুবিদিত।
বিধাননগরের মেয়র পদ নিয়েই যত গন্ডগোল ছিল। ওই পদ পাওয়ার বাসনা যে সুজিতেরও ছিল, সে কথা কারও অজানা নয়। কিন্তু ২০১৫ সালের পুরনির্বাচনের সুজিত, কৃষ্ণা চক্রবর্তীদের টেক্কা দিয়ে সব্যসাচীই বসেন মেয়র পদে। এর পরে ক্রমশ আরও বেড়েছিল দলের অন্দরের টানাপোড়েন। কৃষ্ণা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সব্যসাচী আর সুজিতের লড়াই মাঝে মধ্যেই ‘অতিষ্ঠ’ করে তুলত তৃণমূল নেতৃত্বকে।
তারপর দুজনের দিক আলাদা হয়ে যায়। সব্যসাচী যে প্রার্থী হচ্ছেন, এ প্রকার নিশ্চিতই ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সভা থেকে নাড্ডার কর্মিসভা, সর্বত্র মঞ্চ আলো করে বসে থাকতে দেখা যায় সব্যসাচীকে। এদিকে, মমতার স্নেহধন্য সুজিত বোস। তাঁকে দমকলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী করে তাঁর আনুগত্যের মর্যাদা রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধাননগর চেনা মাঠ দুজনের কাছেই। অনুগামীরাও পুরনো। এবার সেই মাঠে কে খেলে আর কে বাজিমাত করে সেটাই দেখার।