Parliament Session: NEET-UGC NET বিতর্কে বিতর্কে উত্তাল সারা দেশ। বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণে প্রবল চাপের মুখে দেশের নবনির্বাচিত মোদী সরকার। এসবের মাঝেই আজ, সোমবার থেকে শুরু সংসদের অধিবেশন। এটি সংসদের বিশেষ অধিবেশন হতে চলেছে যেখানে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী সদস্যরা সাংসদ হিসাবে সংসদে শপথ নেবেন।
একদিকে বিরোধীরা যখন সংসদের অভ্যন্তরে সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই দেশের জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে কংগ্রেসকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সংসদ ভবনের গেটে তাঁর ভাষণে জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে বিরোধীদের নিশানা করে মোদী বলেন, 'আগামীকাল ২৫শে জুন। ২৫ জুন ভারতের গণতন্ত্রের সেই 'কালো দাগের' ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ভারতের নতুন প্রজন্ম সেই দিনটি কখনই ভুলবে না যখন ভারতের সংবিধান সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল, সংবিধানের প্রতিটি অংশকে 'টুকরো টুকরো' করে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরূপে দমন করা হয়েছিল। আমাদের সরকার সংবিধানকে রক্ষা করে, ভারতের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করে, দেশবাসী এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে ৫০ বছর আগে যা করা হয়েছিল ভবিষ্যতে তা আর কেউ করতে সাহস পাবে না। আমরা ভারতের সংবিধানের নির্দেশ অনুযায়ী সাধারণ মানুষের স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার করব'।
দেশের ১৮ তম লোকসভার 'উদ্বোধনী অধিবেশনের' আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিডিয়ার সামনে ভাষণ দেন। এসময় তিনি বলেন, 'সংসদে তরুণ সাংসদদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, সরকার চালাতে যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, তেমন দেশ চালাতে ঐকমত্য প্রয়োজন। মোদী তাঁর ভাষণে বলেন, 'তার সরকার চেষ্টা করবে যাতে সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং দেশের স্বার্থে কাজ করার'। তিনি দেশের জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, 'তৃতীয় মেয়াদে তার সরকার তিনগুণ কঠোর পরিশ্রম করবে এবং সেই পরিশ্রমকে সম্বল করে তিনগুণ ফল বয়ে আনবে'।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন বক্তব্য রাখার সময় বলেন, "সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে আজ এক গৌরবময় দিন…! স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো, নতুন সংসদ ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পুরনো সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে, আমি নবনির্বাচিত সাংসদদের স্বাগত জানাই এবং তাদের মঙ্গল কামনা করি।"
আরও পড়ুন : < Foreign Mango: চিলি ম্যাঙ্গো থেকে নূর জাহান! আম চাষেই লাখপতি! পথ দেখাচ্ছে শঙ্কর মাস্টার >
ভাষণে জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে নাম না নিয়েই ইন্দিরা গান্ধীর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, '২৫ জুন গণতন্ত্র ও সংবিধানের কলঙ্কের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিশ্চিত করতে হবে যে ভবিষ্যতে কেউ এমন কিছু করতে সাহস না পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "…আজ থেকে শুরু হচ্ছে ১৮ তম লোকসভা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচন অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই নির্বাচনটিও নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কারণ স্বাধীনতার পর দ্বিতীয়বারের মতো দেশের জনগণ মোদী সরকারকে টানা তৃতীয়বারের মতো দেশের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। তাঁর ভাষণে, প্রধানমন্ত্রী মোদী বিরোধীদের সংসদে হট্টগোল সৃষ্টি না করার আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেন, 'দেশের মানুষ নাটক চায় না'।
আরও পড়ুন : < Kolkata Metro: মেট্রো যাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খবর! আজ থেকেই রাতের মেট্রোর সময় বদলে যাচ্ছে >
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, "গত ১০ বছরে, আমরা সবসময় একটি ঐতিহ্য অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি, কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে সরকার চালাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, কিন্তু দেশ পরিচালনার জন্য সর্বসম্মতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সকলের সম্মতিতে ভারত মাতার সেবা এবং ১৪০ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করার লক্ষ্যে আমরা সংবিধানের মর্যাদা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে চাই।"
দেশের ১৮ তম লোকসভার প্রথম অধিবেশনে, বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া' NEET-UG প্রশ্নপত্র ফাঁস সহ একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কোণঠাসা করেছে। প্রটেম স্পিকার নিয়োগ অবৈধ এই দাবিতে সাংসদ চত্ত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারা। তৃণমূলের সাংসদরাও এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।