ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভার ঘোষণা বহুবার করেও সভা করতে বিফল হয়েছে রাজ্য বিজেপি। তারিখের পর তারিখ পরিবর্তন করে একাধিকবার বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতা সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। সূত্রের খবর, এবারও স্বল্প দিনের নোটিশে ব্রিগেড ও শিলিগুড়িতে মোদীর জনসভা নিয়ে দলের অন্দরে সংশয় প্রকাশ করেন রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। কিন্তু জানা গেছে, দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গে একই দিনে প্রধানমন্ত্রীর সভা করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। আজ মোদীর সভার পর দুই সভার "ভিড়" নিয়ে উচ্ছ্বসিত দলের রাজ্য নেতৃত্ব।
বিজেপির জাতীয় কর্মসিমিতির সদস্য মুকুল রায়ের দাবি, ব্রিগেড ও শিলিগুড়ির দুটি সভাই সফল। তাঁর বক্তব্য, "পুরো উত্তরবঙ্গের নয়, শিলিগুড়ির সভা ছিল আড়াইটে লোকসভা কেন্দ্রের। ওই সভায় ৩ লক্ষ লোক হয়েছে। ব্রিগেডে ৬ থেকে ৮ লক্ষ লোক হয়েছে। ব্রিগেডে ৪ হাজার স্কোয়ার ফিটের হ্যাঙ্গার হয়েছে। সেখানেই ৪ লক্ষ লোক ধরে। পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে এটা কেউ করতে পারেনি। দুটো সভাতেই সফল বিজেপি।"
১৫ দিন আগে বিজেপি ঘোষণা করে, ব্রিগেড ও শিলিগুড়িতে একইসঙ্গে দুটি সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই সভা ঘোষণার পর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের প্রাথমিক ধারণা ছিল, দুটি সভা একই দিনে হলে বড় ধরনের ঝুঁকি নেওয়া হয়ে যাবে। ফলে তাঁরা এই দুই সভা করার পক্ষাপাতি ছিলেন না। শেষমেশ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি এই দুটি সভা করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তিনিই রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন দুটি সভার আয়োজন করতে। দুটি সভাতেই দলের "মুখ রক্ষা" হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য বিজেপি।
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, "ব্রিগেডে বুধবার ভিড় উপচে পড়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেডের চেয়ে দেড়গুণ এবং সিপিএমের ব্রিগেডের দ্বিগুন লোক হয়েছিল আমাদের ব্রিগেডে।" মুকুলের পথেই হেঁটে তিনি বলেন, "ব্রিগেডে ৭-৮ লক্ষ লোক হয়েছিল। শিলিগুড়িতে লোক হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ।" এর আগে কোনও দলের ব্রিগেডে এত ভিড় হয়নি বলে তাঁর দাবি। যদিও এদিন ব্রিগেডে গিয়ে সাদা চোখে দেখা গিয়েছে, হ্যাঙ্গারের বাইরের অংশ অনেকটাই ফাঁকা ছিল।
প্রশাসন সূত্রে খবর, খুব বেশি হলে দেড় লক্ষ জমায়েত হয়েছিল। দিন দুয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, "হ্যাঙ্গারে ক'জন লোক ধরে?" সেই মন্তব্যের সূত্র ধরেই তৃণমূল তো বটেই, বামদের একাংশও বলছেন, 'ভিউ কাটার', 'জার্মান হ্যাঙ্গার', 'অ্যালুমিনিয়াম শিট' ইত্যাদি দিয়ে "কৃত্রিম ভিড় তৈরি করে" বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি।